তবু আমি কবিতা লিখি
-মো: মতিয়ার রহমান।
আমি বলেছিলাম—
আর কবিতা লিখবো না।
কারণ এখন আর কেউ কবিতা পড়ে না।
লোকজন স্ক্রল করে,
থামে না—
যেমন থামে না কারও চোখ
অন্যের দীর্ঘশ্বাসে।
কবিতা নাকি সময় নষ্ট,
ভাবনা নাকি বিলাসিতা,
আর অনুভূতি—
সে তো এখন অপ্রয়োজনীয় বোঝা।
তবু-
যখন বুক ভরে আসে,
কথা খুঁজে পায় না জিভ—
তখন মানুষ কী করে?
আমি দেখেছি,
নীরব মানুষদের হাতে
সবচেয়ে বেশি কবিতা থাকে।
তারা উচ্চস্বরে পড়ে না,
চুপচাপ বাঁচে—
কবিতার মতোই।
কেউ বলে,
যে কবিতা পড়ে না,
সে নাকি ভালোবাসে না।
আমি বলি—
যে ভালোবাসে না,
সে-ই কবিতা পড়তে ভয় পায়।
কারণ কবিতা আয়নার মতো—
ভেতরের মুখটা দেখিয়ে দেয়।
যে নিজের শূন্যতা দেখতে চায় না,
সে কবিতার সামনে দাঁড়ায় না।
কবিতা প্রশ্ন করে,
“তুমি কেমন আছ?”
আর মানুষ সে প্রশ্নের উত্তর দিতে
সবচেয়ে বেশি ভয় পায়।
হয়তো তাই—
এই শহরে কবিতা কমে যাচ্ছে,
আর কংক্রিট বাড়ছে।
তবু আমি কবিতা লিখি।
যে পড়বে না, তার জন্যও লিখি।
কারণ একদিন,
কারও খুব একা লাগবে—
সে তখন শব্দ খুঁজবে।
হয়তো তখন,
এই কবিতার কোনো একটি লাইন
তার কাঁধে হাত রাখবে।
কবিতা কাউকে বাঁচায় না,
কিন্তু কাউকে মরতেও দেয় না।
এটাই তার অপরাধ,
এটাই তার শক্তি।
আমি কবিতা লিখি,
কারণ এখনও বিশ্বাস করি—
যেখানে কবিতা আছে,
সেখানে মানুষ পুরোপুরি হারিয়ে যায় না।