২০২৩ সালের প্রথম দিনেই ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ৮৯ রুশ সেনা। এখন পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার জন্য সবথেকে বড় ট্রাজেডি বলা হচ্ছে এটিকে। নিহত প্রত্যেক সৈন্যের পরিবারকে ৫ মিলিয়ন রুবল বা প্রায় ৭৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া বলছে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও সেনা সদস্যরা মোবাইল ফোন চালাচ্ছিল সেখানে। আর এতেই রুশ সেনাদের অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যায় ইউক্রেনের কাছে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে জানানো হয়, রাশিয়ার অধীনে থাকা দনেতস্ক অঞ্চলের মাকিভকার একটি কলেজে থাকা সৈন্যদের ওপর ১লা জানুয়ারি মধ্যরাতে ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করা হয়। রাশিয়ার সেনাবাহিনী বলছে, মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরেও সৈন্যরা সেগুলো ব্যবহার করছিল। সেটা অনুসরণ করেই তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়। প্রাথমিকভাবে রাশিয়া জানিয়েছিল, ওই হামলার কারণে ৬৩ সেনা নিহত হয়েছে। তবে পরবর্তীতে এই সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৮৯ জানানো হয়েছে।
ইউক্রেন যুদ্ধে এটাই রাশিয়ার সবথেকে বড় সেনা হারানোর ঘটনা।রাশিয়া জানিয়েছে, ১লা জানুয়ারি মধ্যরাত একটার দিকে ওই কলেজের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হিমার্স রকেট সিস্টেম থেকে অন্তত ছয়টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। এর মধ্যে দুইটি আকাশেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। বাকি চারটি কলেজে আঘাত করে। বুধবার টেলিগ্রামে প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, হামলায় নিহতদের মধ্যে রেজিমেন্টর উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল বাচুরিন রয়েছেন। পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখার জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তবে এর মধ্যেই এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ইউক্রেনের হামলার সক্ষমতার মধ্যে থাকার পরে এবং নিষিদ্ধ থাকার পরেও সৈন্যদের ব্যাপকভাবে মোবাইল ফোনের ব্যবহার করার কারণে তারা হামলার শিকার হয়েছে। এসব কারণে শত্রুপক্ষ আমাদের সামরিক সদস্যদের অবস্থান শনাক্ত করে, হামলার স্থান নির্ধারণ করতে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পেরেছে। এর পেছনে যে কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে বলে তদন্তে জানা যাবে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানানো হয়েছে রাশিয়ার পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেটা ঠেকাতেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
যখন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়, তখন ওই কারিগরি কলেজটিতে নতুন নিয়োগ পাওয়া সৈন্যতে বোঝাই ছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে ভ্লাদিমির পুতিন যে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্য তলব করেছিলেন, এরা ছিলেন তারই অংশ। আশেপাশে অনেক গোলাবারুদও মজুদ করা ছিল। দনেৎস্কের একজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা পাবেল গুবারেভ বলেছেন, ওই রকম একটি বাড়িতে এতো বেশি সৈন্যর থাকার ব্যবস্থা করা ছিল ‘ফৌজদারি অপরাধ’। এজন্য যাদের দায় রয়েছে, তাদের শাস্তি দেয়া না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।