এন এস বি ডেস্ক: তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। দ্বীপটির গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল ও অবরোধের অনুশীলনসহ এই মহড়াকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছে বেইজিং। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
এতে বলা হয়, এই মহড়ার নাম দেয়া হয়েছে ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’। এতে দেশটির সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সঙ্গে রকেট ফোর্সও অংশ নিয়েছে। মহড়ার অংশ হিসেবে সরাসরি গোলাবর্ষণসহ বিভিন্ন রণনীতি অনুশীলন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তাইওয়ানের কাছে ১১ বিলিয়ন ডলারের বৃহৎ অস্ত্র প্যাকেজ বিক্রির ঘোষণার পর এই মহড়া শুরু করলো চীন। ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বেইজিং এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কয়েকটি মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। এদিকে তাইওয়ানের চলতি বছরে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদারের উদ্যোগও বেইজিংয়ের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় চীনের এই সামরিক মহড়ার সমালোচনা করে একে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার সকালে তারা দ্বীপটির আশপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও জাহাজ শনাক্ত করেছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিজেদের বাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বাহিনী।
চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এই মহড়াকে ‘ন্যায়ের ঢাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এক পোস্টে বলা হয়, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা এই ঢালের মুখে ধ্বংস হয়ে যাবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মহড়াকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির জন্য কঠোর শাস্তি বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বহিরাগত শক্তিকে তাইওয়ান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেছেন, তাইওয়ান শান্তি বজায় রাখতে চায় এবং বর্তমান অবস্থান অক্ষণ্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অপরিহার্য। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের পর থেকে তাইওয়ান প্রণালীতে নিয়মিত সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। চলমান এই মহড়াটি ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নতুন প্রধান ইয়াং ঝিবিন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বড় মহড়া। একই সঙ্গে তাইওয়ানও নিজস্ব সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করে চলেছে, যা এ অঞ্চলের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।