একজন শিক্ষার্থীর কাছে একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা হলেন দ্বিতীয় পিতা বা মাতা। কারণ, তিনিই তার ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে দেন। ফলে একজন শিক্ষককে হতে হয় অন্য সবার চেয়ে উন্নত নৈতিকতা সম্পন্ন। কিন্তু কিছু শিক্ষক বা শিক্ষিকা সেই সুযোগটাকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন বা পড়ছেন। এতে সমাজে তারা ঘৃণিত হন। পরিবারের কাছে ছোট হন। এমনই একজন শিক্ষিকা মনিক ওমস (৩১)। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার মাফ্রা অঞ্চলের একজন শিক্ষিকা তিনি। কিন্তু তার ভিতর যৌনলালসা পেয়ে বসে। ১৬ বছর বয়সী একজন ছাত্রের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।বাসাবাড়িতে তো বটেই, নিজের গাড়ির ব্যাকসিটে ওই ছাত্রের সঙ্গে তিনি যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মনিক। এ ঘটনা জানাজানি হলে গত ২৪শে মার্চ ভিক্টোরিয়ার কাউন্টি কোর্টের বিচারক জন স্মলউড তাকে চার বছরের জন্য সংশোধনাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে অপরাধের জন্য ৩০০ ঘন্টার সমাজসেবামুলক কাজের নির্দেশ দেন। কিন্তু ভিক্টোরিয়ার অফিস অব পাবলিক প্রসিকিউশন এই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করে। তাতে বলা হয়, বিচারক ভুল রায় দিয়েছেন। ফলে সম্প্রতি ভিক্টোরিয়া কোর্ট অব আপিলের সুপ্রিম কোর্ট মনিকের বিরুদ্ধে রায় আমলে নেয়। তাতে বলা হয়, মনিক ওমস যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা, তাই তাকে জেল দেয়া ঠিক হয়নি। মনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওই ছাত্রটি তার তত্ত্বাবধানে এবং কেয়ারে ছিল। কিন্তু তার দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়ে তাকে যৌনতার শিকারে পরিণত করেছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চারটি অভিযোগ আছে। তবে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার জেসন গুলাসি, এসসি আদালতে বলেছেন, তার মক্কেল অন্তঃসত্ত্বা। এ জন্যই তার বড় রকম সুরক্ষা পাওয়ার কথা। এখানে উল্লেখ, যখন বিচারক স্মলউড প্রথমে মনিকের বিরুদ্ধে রায় দেয়ার আগে শুনানি করেন, তখন মনিকের আইনজীবী ব্যারিস্টার ক্যাথেরিন রোলফি আদালতে জানান, তার মক্কেল মনিক একজন বন্ধ্যা। কিন্তু আপিলে বিচারক রিচার্ড নিয়াল, মারি কেনেডি এবং ক্যামেরন ম্যাকুলেকে নতুন আইনজীবী জ্যাসন গুলাসি বলেন, জেল দেয়ার সময়টাতেই তার মক্কেল অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সর্বশেষ শুনানিতে তিনি বলেছেন, মনিক এখন ১৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। আইনজীবী বলেন, তিনি যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা, তাই বিষয়টি গুরুতর। এটি তার সন্তান জন্ম দেয়ার ইস্যু। এর সঙ্গে তার মানসিক স্বাস্থ্যও জড়িত। তিনি এরই মধ্যে গর্ভপাত করার কথা ভেবেছেন। তিনি খুব হতাশায় আছেন। এই শুনানি শেষে আদালত তাকে মুক্তি দিয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রথমে ওই ছাত্রের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যাট করতেন মনিক ওমস। তারপর ফোনে। দীর্ঘদিন ধরে নিজের খোলামেলা ছবি ও টেক্সট ম্যাসেজ পাঠাতে থাকেন। গত বছর জুলাই মাসে তাদের মধ্যে প্রথম চুম্বন বিনিময় হয়। তারপর তারা একটি গাড়িতে মিলিত হন। সেখানে মনিক ওমসের গাড়ির পিছনের সিটে তাদের বাধাহীন সম্পর্ক হয়। এ সময় রাতে একটি বনের কাছে পার্ক করা ছিল তার গাড়ি। এরপর থেকে ওই ছাত্রের সঙ্গে কমপক্ষে চারবার যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন।