গাজীপুরের লাখ লাখ মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। কিন্তু তিন বছরের মাথায় একটি অবৈধ চিঠি দিয়ে আমার মেয়র পদ খারিজ করে দেয়া হয়েছে। আমি এই তিন বছর সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করিনি। আমি বিনা টাকায়, বিনা অর্থে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেবা দিয়েছি। এটা একজন জনপ্রতিনিধির জন্য কতটুকু আইন অনুসরণ করা হয়েছে, সে বিচার আপনাদের। সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তর ও শাখা তাকে হয়রানি করছে বলে দুদকে এসে সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। বলেন, আমার বিরুদ্ধে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে মন্ত্রণালয়, দুদক ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় যে চিঠি দেয়া হয়েছে, তা বানোয়াট, কাল্পনিক কাহিনী। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার আমাকে একটি প্রজেক্টে ৭০০ কোটি টাকা আরেকটি প্রজেক্টে ৮০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। দুই প্রজেক্ট থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বিভিন্ন রাস্তার জন্য বরাদ্দ দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন দপ্তরে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চিঠি দিয়েছে।সিটি করপোরেশনকে দেয়াই হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা। সেখানে কীভাবে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়। আবার সেই চিঠির অভিযোগ মন্ত্রণালয় ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তর তদন্ত করে। যারা মিথ্যা বানোয়াট চিঠি দিলো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তর ও বিভিন্ন শাখা সেটা তদন্ত করে। এগুলো বিভিন্নভাবে আমাকে মানসিকভাবে টর্চার করছে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আপনারা জানেন আগামী ২৫শে মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। আমার গর্ভধারিণী মা ওই নির্বাচনের একজন মেয়র প্রার্থী। আমি আমার মায়ের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়ক। সে হিসেবে ২১ ও ২২শে মে নির্বাচন প্রচারণার শেষ দিন। আজকে হঠাৎ করে দুদক আমাকে চিঠি দিয়ে ডাকলেন। আমি যেন ১০টার সময় আসি। আমি যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি মনে করি দুদক একটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। দুদককে ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো পক্ষ কিংবা কোনো পেশি শক্তি ব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করছে। একজন জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হিসেবে দুদকে এসেছি। আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছিলাম। মঞ্জুর করে সময় দেয়া হয়েছে কিনা সেটা জানতেই আমি এখানে এসেছিলাম। দুদক আজ জানিয়েছে আমার সময় আবেদন মঞ্জুর করেছে। বিস্তারিত পরে জানাবেন বলে জানিয়েছে। একটা কথা বলতে চাই, আমি গাজীপুরের মানুষের জন্য কাজ করেছি। সেই কাজের পুরস্কার না দিয়ে, যারা অপরাধী, মিথ্যা চিঠি চালাচালি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে।