রাশিয়াকে সহায়তা দেয়ার বিষয়ে চীনকে সাবধান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার কোনো গণমাধ্যমে নয়, সরাসরি চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংইকে এই সাবধান বার্তা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত হওয়া গ্লোবাল সিকিউরিটি কনফারেন্সের সাইডলাইনে মুখোমুখি হন এই দুই নেতা। এসময় ব্লিঙ্কেন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের বেলুন প্রবেশের নিন্দা জানান। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
খবরে জানানো হয়, বেলুন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এত মাতামাতির সমালোচনা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং। এই এক বেলুন-কাণ্ডে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বেইজিং-এ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি সফরও বাতিল করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে বেলুনটি ভূপাতিত করে বিমান বাহিনী। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে বেইজিং এর অবস্থান নিয়ে পশ্চিমারা যখন নানা অভিযোগ দিয়ে আসছিল তখনই এই বেলুন প্রবেশের ঘটনা ঘটে।
জার্মানিতে শনিবার মুখোমুখি হন ব্লিঙ্কেন ও ওয়াং। এর একদিন পরে এনবিসি নিউজের ‘মিট দ্য প্রেস উইথ চক টড’-এ একটি সাক্ষাৎকারে ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, চীন রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।তিনি ওয়াংকে স্পষ্ট করে বলেছেন যে, চীন এমনটি করলে আমাদের সম্পর্কের গুরুতর পরিণতি হবে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, চীন এখন রাশিয়াকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তার কথা ভাবছে। ওয়াশিংটন শীগগিরই সেসব তালিকা প্রকাশ করবে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, চীনের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে পদ্ধতিগত নিষেধাজ্ঞা ফাঁকি দিয়ে বস্তুগত সহায়তা প্রদান করলে এর প্রভাব এবং পরিণতি সম্পর্কে বেশ স্পষ্টভাবে সতর্ক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইউক্রেন রুশ অভিযানের প্রথম থেকেই বেইজিংয়ের ওপর নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের দেশগুলো। পশ্চিমাদের অভিযোগ, এই যুদ্ধে গোপনে মস্কোকে সহায়তা দিচ্ছে চীন। যদিও এ নিয়ে প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়াকে কোনভাবেই সহায়তা না করতে।
বেলুন প্রসঙ্গে টুইট বার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আরও জানান, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সাক্ষাৎকারে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সতর্ক করেন ব্লিঙ্কেন। এনবিসিকে সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, বেলুনকাণ্ডে ক্ষমা চাননি ওয়াং। আমি তাকে সহজভাবেই বলেছিলাম, এ ঘটনা একদমই অগ্রহণযোগ্য। তবে ওয়াশিংটন বেলুন নিয়ে যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তাতে দুই দেশের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াং।