বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১১ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

বাংলাদেশ নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধানের বক্তব্য নাকচ বিলাওয়ালের

Reporter Name
Update : বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২২, ৭:২৭ অপরাহ্ন

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয় নিয়ে সদ্যসাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নাকচ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। অবসরে যাওয়ার কয়েকদিন আগে (২৩ নভেম্বর) বিদায়ী সেনাপ্রধান বলেন, পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়ার পেছনে সামরিক নয়, রাজনৈতিক ব্যর্থতা দায়ী ছিল।

এক সপ্তাহ পর বাজওয়ার এই দাবি নাকচ করে পাকিস্তান পিপল’স পার্টির (পিপিপি) নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল বলেন, ১৯৭১ সালে পূর্বপাকিস্তান হাতছাড়া হওয়ার ঘটনা ছিল ‘সামরিক ব্যর্থতা’, যা জুলফিকার আলি ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পিপিপির জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ বয়ে এনেছিল। পিপিপির ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (৩০ নভেম্বর) করাচির নিশতার পার্কে এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন বিলাওয়াল।

ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিন সমাবেশে নিজের দল পিপিপি প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও নানা অর্জন তুলে ধরেন বিলাওয়াল। বক্তব্যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। পিপিপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলি ভুট্টোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘একটা ‘বিভক্ত দেশ’কে ঐক্যবদ্ধ করার চ্যালেঞ্জ ঘাড়ে তুলে নিয়েছিলেন ভুট্টো।’’

জুলফিকার আলি ভুট্টোর কন্যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাওয়াল বর্তমানে পিপিপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘জুলফিকার আলি ভুট্টো যখন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, পাকিস্তানের জনগণ ছিল বিভক্ত ও আশাহত। কিন্তু তিনি পুরো জাতিকে নতুন করে গড়ে তোলেন, জনগণের মধ্যে মনোবল চাঙ্গা করেন এবং সামরিক ব্যর্থতার কারণে পূর্বপাকিস্তানে (বাংলাদেশে) বন্দি হওয়া ৯০ হাজার সেনাকে দেশে ফিরিয়ে আনেন।’

টানা ছয় বছর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পর গত মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) অবসরে যান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া। অবসরে যাওয়ার মাত্র এক সপ্তাহ আগে ওই বক্তব্য দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়েও খোলামেলা কথা বলেন জেনারেল বাজওয়া। যা সচরাচর দেখা যায় না। ২৩ নভেম্বর সামরিক বাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার্সে এক অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘আমি একটা তথ্য সংশোধন করে দিতে চাই। পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, ছিল রাজনৈতিক ব্যর্থতা। লড়াইরত সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, বরং এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দফতরের লোকজন।’

তার কথায়, ‘পাকিস্তানের এই ৩৪ হাজার সেনাসদস্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর আড়াই লাখ সেনা ও মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষিত ২ লাখ যোদ্ধার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পাকিস্তানি সেনাসদস্যরা সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন এবং নজিরবিহীন ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন। অথচ তাদের সেই ত্যাগ দেশে কোনো স্বীকৃতি পায়নি, যা ত্যাগ স্বীকার করা সেনাসদস্যদের প্রতি চরম অন্যায়।’

তবে সেদিনের বক্তব্যে বিরল এক স্বীকারোক্তি করেন বাজওয়া। ৭০ বছর ধরে পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর নাকগলানোর বিষয়টি নিজ মুখে স্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরপর সামরিক বাহিনী পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে এবং রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host