ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে মুখোমুখি হবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বিশ্বের পরাশক্তি দুই দেশের নেতাদের বৈঠক ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যমতে, দুই নেতার আলোচনায় রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ, তাইওয়ানসহ দ্বিপাক্ষিক নানা ইস্যু প্রাধান্য পেতে পারে। তবে, আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হবে ও কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে তা নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। খবর সিএনএনের। তাইওয়ানসহ বিভিন্ন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বৈরী সম্পর্ক। তবে, চলতি বছর মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি ন্যান্সি পেলোসির তাইপে সফর নিয়ে উত্তেজনা আরও চরমে পৌঁছায়। গুরুত্বপূর্ণ এই ইস্যুটি আলোচনায় উঠে আসলেও বাইডেন-শি কার্যকর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। একদল রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তাদের আলোচনা থেকে তাইওয়ান প্রণালিতে শান্তি প্রক্রিয়া ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, তাইওয়ান ছাড়াও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক, যোগাযোগ, অর্থনীতিসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ে আশানুরূপ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ওয়াশিংটন-বেইজিংয়ের মধ্যকার বৈরী সম্পর্ক কিছুটা হলেও সহজ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউস জানায়, এশিয়া অঞ্চলে চীনের অর্থনৈতিক যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে ভাবিয়ে তুলছে। তাই এ বিষয়ে চীনা নেতার সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কূটনীতিক মনে করছেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আদায় কাঁচকলা সম্পর্ক। একে অপরকে শত্রুভাবাপন্ন দুই দেশের নেতার আলোচনা থেকে কোনো ফল আসবে না। দুপক্ষের কাছ থেকে কোনো যৌথ সিদ্ধান্তও আসবে না বলে ধারণা তাদের।
এদিকে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক পর্যবেক্ষণকারী অনেকের মতে, এশিয়া অঞ্চলে চীনের আধিপত্য দিন দিন বাড়ছে। তাই এই অঞ্চলে দেশটির প্রভাব মোকাবিলায় বাইডেন প্রশাসনও এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর তাই এই বৈঠক ওয়াশিংটনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় জি-টোয়েন্টি সম্মেলনে আগামী ১৪ নভেম্বর (সোমবার) তাদের বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক উপদেষ্টা।
সবশেষ ২০১১ সালে মিলিত হয়েছিলেন জো বাইডেন ও শি জিনপিং। সে সময় দুজনেই ছিলেন দুই দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট। এরপর সময় গড়িয়েছে অনেক। এখন দুজনই শক্তিধর দুই রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তবে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সরাসরি সাক্ষাতের চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অবশেষে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে তাদের বৈঠক হতে যাচ্ছে।