সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

জঙ্গিদের গোপন কার্যক্রম নিয়ে নতুন তথ্য 

Reporter Name
Update : মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২, ১:১৮ অপরাহ্ন

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‌’জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ গোপন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পাহাড় সবচেয়ে নিরাপদ মনে করে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি এড়ানো সহজ। গহিন বনে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অভিযান চালানোও কষ্টসাধ্য।

এ রকম বেশকিছু কারণে প্রশিক্ষণের জন্য পাহাড়ি এলাকা বেছে নিয়েছে উগ্রবাদী নতুন এ সংগঠনটি। গ্রেফতার হওয়া কয়েক সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া নথি বিশ্লেষণ করে নতুন এসব তথ্য দিয়েছে র‌্যাব।

গত ৬ অক্টোবর ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া‘ নামে নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের তথ্য দেয় র‌্যাব। পরবর্তীতে জানানো হয়, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনটি আস্তানা গেড়েছে পাহাড়ের গহিন অরণ্যে। উগ্রবাদী সংগঠনটির ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরছাড়া ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে কিছু গোপন নথি।

সেসব নথি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নতুন জঙ্গি সংগঠনটির রয়েছে সাতটি সেক্টর। এর মধ্যে মাসুল সেক্টরের কাজ হলো নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী সাথীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা। রয়েছে সৈনিক, হিজরত ও আনসার শাখা। আনসার শাখার ভাগ তিনটি। ক, খ, গ – এই তিন শ্রেণির আনসাররা এক থেকে দশ দিন বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত থাকবে; ডোনার শাখার সদস্যরাও তিন ভাগে বিভক্ত,  যারা প্রতিমাসে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত দিচ্ছে, তারা ‘ক’ শ্রেণির ডোনার। এ ছাড়া যারা ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা যারা দিচ্ছে, তারা ‘খ’ শ্রেণির এবং ১ থেকে ৩ হাজার টাকা দিচ্ছে ‘গ’ শ্রেণির ডোনাররা।

গ্রেফতার সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া আরেকটি নথিতে কথিত জঙ্গিদের হিজরত এবং প্রস্তুতি সম্পর্কে দিক নির্দেশনা পাওয়া গেছে। তাতে পাঁচটি বিষয়ের কথা উল্লেখ আছে। হিজরতে আসার এক মাস আগে থেকে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না। দীর্ঘ সময় দূরে থাকার কারণ সম্পর্কে পরিবারের কাছে ব্যাখ্যা করে আসতে হবে। ব্যবহার করা যাবে না সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অন্তত ২০ কেজি পর্যন্ত মালপত্র বহন করার সক্ষমতা থাকতে হবে। থাকতে হবে দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা হাঁটার সক্ষমতা।

নতুন জঙ্গি সংগঠনে সদস্য নির্বাচনে ছয়টি বিষয় অনুসরণ করা হয়, যেটিকে তারা বলছেন মারহালা। ভীতু, কৃপণ, বাচাল, ঘরকুনো ও রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। টার্গেট করা তরুণদের দলে সংগঠনে টানতে নেয়া হয় কিছু কৌশল।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সময় সংবাদকে বলেন, ‘সশস্ত্র সংগ্রামের ক্ষেত্রে তাদের কী প্রস্তুতি হবে – এ ধরনের একটি বই তাদের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। পাহাড় এবং বনভূমির সংমিশ্রণে জায়টাটি তারা বেছে নিয়েছে। সেটি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি এবং যুদ্ধের কৌশল হিসেবে তারা মনে করেছে।

শুধু অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন।

সময় সংবাদকে তিনি বলেন, জঙ্গি নির্মূল দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। সমাজের মধ্যে যে কারণে জঙ্গিবাদ দানা বাঁধে, জঙ্গিবাদ জন্ম নেয় – সেই কারণগুলো চিহ্নিত করে সেটা নির্মূল করতে হবে।

নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণদের গ্রেফতারে পাহাড়ে অব্যাহত অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host