নয় মাসে গড়িয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে শুরু হওয়া যুদ্ধ টানা ৩৫ সপ্তাহ ধরে চলছে। থামার কোনো লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। যুদ্ধে এই মুহূর্তে রুশ সেনাবাহিনীর কিছু দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
যুদ্ধে অনেক জায়গায় রুশ বাহিনী তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। অনেক জায়গায় অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পর্যাপ্ত না থাকায় প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। এ ছাড়াও ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলার মুখে অস্ত্র ও সরঞ্জাম হারিয়েছে তারা। ফলে ইউক্রেনের বিশাল একটা অঞ্চল দখল করলেও তার মধ্যে অল্প কিছু এলাকা হাতছাড়া হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে অস্ত্র সরঞ্জাম উৎপাদন বৃদ্ধি ও তা দ্রুত যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনাদের হাতে পৌঁছানোর নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অস্ত্র ও সরঞ্জাম উৎপাদন বাড়ানো ও যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ সেনাদের হাতে তা পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছেন পুতিন। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) কমিটির এক বৈঠকে অংশ নেন তিনি। বৈঠকে তিনি ইউক্রেনের সব এলাকায় যুদ্ধের গতি বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
ইউক্রেনে তিন লাখ সেনা নিযুক্তের ঘোষণা দিয়েছেন পুতিন। রুশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এসব সেনার অনেকেই এখনও প্রয়োজনীয় অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পাননি। এমনকি তাদের এখনও চিকিৎসাসামগ্রী ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট দেয়া হয়নি।
অনেকে নিজ উদ্যোগে এসব সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছেন। সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিতে অনেকেই পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও পাননি। প্রেসিডেন্ট পুতিন গত সপ্তাহে রুশ সেনাদের একটি প্রশিক্ষণ শিবির পরিদর্শন করেন। সেই সময় এই ঘাটতির বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করা হয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকেই।
পরিদর্শনকালে পুতিন সেসব রুশ সেনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যাদের পর্যাপ্ত অস্ত্র ও সরঞ্জাম রয়েছে। তবে ঘাটতির বিষয়টি উঠে এসেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার গোলাবারুদের সরবরাহ কমে গেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের মজুতও কমের দিকে। তাই যুদ্ধে এসব অস্ত্রের ব্যবহার অনেকটা কমিয়েছে মস্কো। এ ছাড়া এমনও হতে পারে, রাশিয়া কৌশলগত সামরিক লক্ষ্য বদলে ফেলছে।