সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

বাংলাদেশে চীনের কোন ঋণের ফাঁদ নেই: রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

Reporter Name
Update : বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২, ৩:৪৭ অপরাহ্ন

ঢাকাস্থ নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক ভালো এবং বাংলাদেশে চীনের কোন ঋণের ফাঁদ নেই। বুধবার মধ্যাহ্নে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ডিকাব-টক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন। মেগা প্রকল্পে দফায় দফায় ব্যয় বাড়ার পাশাপাশির চীনা ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন অর্থনীতিবিদরা শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনে বাংলাদেশও ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে কি-না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, “শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের কোথাও চীনা ঋণের কোনো ফাঁদ নেই। পশ্চিমা বাণিজ্যিক ঋণ এবং বহু-আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের সিংহভাগ। সেই দেশের (শ্রীলঙ্কা) মোট বৈদেশিক ঋণের ১০ ভাগেরও কম চীনা ঋণ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা, বিদেশি ঋণের মাত্র ৬ শতাংশ চীনের ঋণ। সেই বিবেচনায় আমি বলব যে বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক ভালো। বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের মাত্রাও অনেক কম।

বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চীনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিশ্রুতিশীল জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন ইউক্রেন ইস্যুতে বাংলাদেশের মতো একই মত পোষণ করে এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানে আলোচনা ও আলোচনার গুরুত্ব তুলে ধরে। রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত লি বলেন, চীন রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে রাখাইনে শান্তি ফেরা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।

বাংলাদেশে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চায় চীন
এদিকে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিকাবের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠান ডিকাব টকে দেয়া লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত লি জিমিং আরও বলেন, বাংলাদেশে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চায় চীন। চীন ও বাংলাদেশ একে অন্যের ভালো প্রতিবেশী। দুই দেশই একে অপরের বিশ্বস্ত বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য অংশীদার।  বাংলাদেশ ও চীন সব সময় নিজেদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাসংক্রান্ত মৌলিক স্বার্থের বিষয়ে একে অপরকে বুঝেছে এবং সমর্থন করেছে।

তাইওয়ান প্রশ্নে লি জিমিং বলেন, আশাকরি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ অব্যাহতভাবে ‘এক চীন নীতি’ মেনে চলবে।  চীনের আইনসম্মত ও ন্যায্য অবস্থান বাংলাদেশ বুঝবে ও সমর্থন করবে।
এক চীন নীতির প্রতি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকার ও তাইওয়ানের স্বাধীনতার প্রতি বাংলাদেশের বিরোধিতায় আমরা বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞ। আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি রক্ষায় চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান রাষ্ট্রদূত। একই সঙ্গে সিত্রাংয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি।
পশ্চিমা গণমাধ্যমকে দোষারোপ: ওদিকে উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের বৈশ্বিক প্রচারণার জন্য পশ্চিমা গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। ডিকাব টকে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীনের উইঘুরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে। ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক কারণে চীনে কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না দাবি করে তিনি বলেন, চীনে প্রায় ২৫ লাখ মুসলিমের বাস। এর মধ্যে অল্প সংখ্যক লোক সন্ত্রাসের দায়ে অভিযুক্ত। ৫ উইঘুর মুসলিম রাষ্ট্রদূতের হোমটাউন কুনমিংয়ের রেলস্টেশনে হামলা করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈন উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য রাখেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host