সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৮ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

লালমনিরহাটে একই আঙিনায় মসজিদ-মন্দির

মোঃ গোলাপ মিয়া লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি
Update : মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০২২, ৮:০৩ অপরাহ্ন

সারা দেশে পালিত হচ্ছে সনাতন ধর্মের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আজ চলছে নবমী। দেশজুড়ে পূজার উৎসবমুখরতার পাশাপাশি লালমনিরহাট হয়ে উঠেছে সম্প্রীতির উজ্জ্বল নিদর্শন। জেলার পুরান বাজার কালীবাড়ি এলাকায় মসজিদ ও মন্দিরের সহাবস্থান যুগ যুগ ধরে সম্প্রীতির ফুল হয়ে ফুটে আছে। পাশাপাশি দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছে নিজ নিজ ধর্ম। ধর্মীয় সম্প্রীতি সমুন্নত রেখেই সেখানে চলছে শারদীয় দুর্গোৎসব।

লালমনিরহাট শহরের পুরান বাজার কালীবাড়ি এলাকায় ১৮৩৬ সালে কালীমন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেশ কয়েক বছর পর বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যবসায়ীরা নামাজ আদায়ের জন্য ওই মন্দিরের পাশেই একটি ছোট ঘর তোলেন। পরবর্তী সময়ে এই মসজিদের নামকরণও করা হয় পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই সময় থেকে একই উঠানে চলছে দুই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি। দুটি উপাসনালয়ের একটি মাঠ হওয়ায় ওয়াজ-মাহফিল, পূজা-অর্চনাসহ দুই ধর্মেরই বড় অনুষ্ঠানের আগে দুপক্ষের কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেয়। পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়েই দুটি সম্প্রদায়ের উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।


সম্প্রীতির এই নিদর্শন এখন ভ্রমণপিপাসুদের মাঝেও আগ্রহ তৈরি করছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা স্বচক্ষে দেখতে আসেন এই সম্প্রীতির ফুল মসজিদ-মন্দির। এলাকায় ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান, লালমনিরহাটে ধর্মীয় সম্প্রীতির এই উদাহরণ আমাদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশের চিত্র। কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই যুগ যুগ ধরে এমন সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ধর্মীয় উৎসব পালন করছেন তারা। সত্যি এটি আমাদের গৌরবের বিষয়।
পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘ঐতিহ্যবাহী পুরান বাজার জামে মসজিদের পাশেই মন্দির, একসঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠান। মসজিদের আগে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আজানের পর থেকে  জামায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের মাইক, ঢাকঢোলসহ যাবতীয় শব্দযন্ত্র বন্ধ থাকে। নামাজের প্রথম জামায়াত শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়। আমরা তাদের সব কাজে সহযোগিতা করি, তারাও আমাদের সহযোগিতা করেন।’

কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি মন্দিরের সভাপতি ও প্রধান পুরোহিত শংকর চক্রবর্তী বলেন, ‘মন্দিরটি ১৮৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এলাকার নামকরণও করা হয় কালীবাড়ি। পরে এখানে বাজার গড়ে উঠলে বাজারের ব্যবসায়ী ও শহরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠা করেন পুরান বাজার জামে মসজিদ। সেই থেকে পারস্পরিক সহযোগিতায় চলছে দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়ের কার্যক্রম। সামান্য বিশৃঙ্খলাও হয় না এখানে। জন্মের পর থেকে এভাবেই চলতে দেখছি।’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ‘এখানকার মানুষ সব ধর্মের মানুষের সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। যার প্রমাণ কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি মন্দির ও পুরান বাজার জামে মসজিদ। এটি আগামী প্রজন্মকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশেষভাবে আগ্রহী ও বিশ্বাসী করে তুলবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host