হেনোলাক্স কোম্পানিতে বিনিয়োগকৃত ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ফেরত না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে গাজী আনিস নামে এক ব্যবসায়ী নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আশেপাশের লোকজন এসে আগুন নেভায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে যুক্ত।
শাহবাগ থানার এসআই গোলাম হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, আত্মহত্যা চেষ্টাকারী ব্যক্তির নাম গাজী আনিস। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী এলাকায়। হেনোলাক্স কোম্পানিতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পাওনা। দীর্ঘদিন যাবৎ এই টাকা না দেয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
দগ্ধ আনিসকে নিয়ে আসা মোহাম্মদ আলী জানান, আনিস হেনোলাক্স কোম্পানির কাছে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তার পাওনা ছিল বলে জানান। আজ (গতকাল) প্রেস ক্লাবের বাইরে এসে তার শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
গাজী আনিসের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং তার অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্সিয়াল মেডিকেল অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, গাজী আনিসের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি এখন অজ্ঞান হয়ে আছেন। তাকে আইসিইউতে নেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ৫০ শতাংশের উপরে পুড়ে গেলে যেকোনো রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যায়। আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি তার চিকিৎসা দিতে। আমরা দ্রুত বোর্ড গঠন করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।
দগ্ধের ভাই নজরুল ইসলাম জানান, আমার ভাই কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। আমরা জানতে পেরেছি হেনোলাক্স কোম্পানির কাছ থেকে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তার পাওনা ছিল। পাওনা টাকা না পেয়ে তিনি হতাশ ছিলেন। তার তিনটি মেয়ে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজী আনিস জাতীয় প্রেস ক্লাবে পাওনা টাকার বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্রেই ২০১৮ সালে তিনি এই টাকা হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করেন। এরপর তিনি বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না।