ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি পরিত্যক্ত স্কুলঘর ভেঙে পড়ে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ায় শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা শিক্ষার্থীরা হলো, সামিয়া (০৭), হাবিবা (০৭), মারিয়া (০৮) ও নাজমুলসহ (১২) ১০ জন। আহতদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরকারিভাবে পরিচালিত শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি টিনশেড ঘরে পড়াশোনা শুরু হয়। কিছুদিন আগে স্কুলটির কার্যক্রম পাশের আধাপাকা ভবনে স্থানান্তরিত করা হয়।
এরপর থেকে টিনশেডের স্কুলঘরটি পরিত্যক্ত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকে।
মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল ছুটি হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা পুরাতন স্কুল ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় হঠাৎ টিনের স্কুলঘরটি ভেঙে পড়ে। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়।
খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় তারা চার শিক্ষার্থীকে গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত শিক্ষার্থীর মারিয়ার আক্তারের মা বন্যা বেগম বলেন, স্কুল ঘরটি সরানোর জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। তারা আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো ধরনের কর্ণপাত করছিলেন না। এরই মধ্যে আজ এমন ঘটনা ঘটল। আমরা এর প্রতিকার চাই।
অপর আহত শিক্ষার্থী হাবিবার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা আশঙ্কা করেছিলাম যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে। আমরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শোনেনি। পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা রত্না আক্তার এবং ওহায়িদা আক্তার জানান, বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পর পরই ঘটনাটি ঘটে। এতে অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতাল নিয়ে আসা হয় বাকিদের অভিভাবকেরা নিয়ে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের লিডার জুয়েল মিয়া বলেন, খবর পাওয়ার পর আমরা চার শিশুকে তাৎক্ষণিক এসে ঘরের নিচ থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। এসময় বেশ কয়েকজন শিশু আহত হয়। তারা কম বেশি আহত হওয়ায় গার্ডিয়ানের সঙ্গে বাড়ি চলে গেছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি শেখ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেই। আহত শিক্ষার্থীর পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি ঘর ধসে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, স্কুলঘর ধসের খবর পেয়ে আমরা এসেছি। হাসপাতালে পুলিশ কাজ করছে।