রকিবুল ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীরের যোগসাজসে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকের বসতবাড়ী জবর দখলে নিয়েছে কলেজ শিক্ষক বিধুভুষণ গং।
থানায় অভিযোগ দায়েরের চারদিনেও ঘটনাস্থল তদন্ত করেনি পুলিশ। বিধুর লোক জনের হুমকি ও অস্ত্রের আঘাতের ভয়ে জীবন বাঁচাতে অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছেন ভুক্তভোগি অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক প্রেমেন্দ্রে বর্মনের পরিবার।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে জানাগেছে অর্থবিত্ত্ববান প্রভাবশালী শিক্ষক বিধুভুষণ তার দুই ছেলে যথাক্রমে ডাক্তার হিরম্ব সাগর ও দেবাশিষ সৈকত স্থানীয় উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীরকে ম্যানেজ করে তারই যোগ সাজসে জমির মনগড়া সীমানা নির্ধারন করে স্কুল শিক্ষকের বাড়ীতে তালা ঝুলিয়ে ও বাঁশের ঘেরা দিয়ে জবর দখল করে নেয়।
অভিযোগ সূত্রে আরো উল্যেখ রয়েছে বিধুভুষণ ও স্কুল শিক্ষক প্রেমেন্দ্রের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলে আসছে। অভিযোগে উল্ল্যেখিত এক নং অভিযুক্ত বিধুভুষনের সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বললে তিনি জানান, সে তার জমি ও বাড়ী নিয়েছে তাতে কাউকে কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কথা বললে তাকেও অপমান করা সহ হেনস্তা করা হবে। এসময় তার ছোট ছেলে ৩ নং অভিযুক্ত স্বদম্ভে দা হাতে নিয়ে বলে কোন কথা হবে না জমি বাড়ী তাদের তাই কারও সাথে কথা বলার বা এ বিষয়ে উত্তর দেয়ার কিছু নাই।
এর আগে উক্ত বিষয়ে হাতিবান্ধা উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার জাহাঙ্গীরের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি জানান, স্যারের নির্দেশে জমির সীমানা করেছি। প্রেমেন্দ্র’র জমি তাতে থাকবে কিনা সেটা পূণরায় সীমানা নির্ধারণ করলে বোঝা যাবে। ঠিক কিছুক্ষণ পর ডাক্তার সাগর মোবাইল ফোনে বলেন, হাতিবান্ধায় তার সাথে দেখা করতে হবে। কিন্তু কেন?
এ বিষয়ে হাতিবান্ধা থানার ওসির সাথে ফোনে কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগ হাতে পেলে তদন্ত করে দেখা হবে।
প্রেমেন্দ্র’র বাড়ী দখল চলাচলের রাস্তা বন্ধ বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে কেমন দেখছেন জানতে চাইলে হাতিবান্ধার ইউএনও উত্তরে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সার্ভেয়ার জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে যেমন ব্যবস্থা নেয়া হেবে, তেমনি বাড়ী বা জমির বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
স্থানীয় একাধিক সচেতন মহল জানান, কলেজ শিক্ষক ও তার বড় ছেলে সরকারী চাকুরী করে। অনেক টাকা হওয়ায় তারা টাকা আর ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রেমেন্দ্র’র পরিবারকে বাড়ী ছাড়া করেছে। তাছাড়া তারা বাপ ছেলে সরকারী চাকুরী করার সুবাদে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করার যথেষ্ট অর্জন তাদের আছে। তাদের ক্ষমতার দাপটে প্রকাশ্যে কেউ স্বাক্ষী ও ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি। তাহলে চার দিনেও যেখানে পুলিশ তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যায়নি, তাহলে আর কতদিন লাগবে এ ঘটনার তদন্ত শেষ হতে তা সংশ্লিষ্ট এলাকার সচেতন মহলের এমন মন্তব্য। উক্ত ঘটনার ন্যায় বিচার চায় ভুক্তভোগী প্রেমেন্দ্র বর্মনের পরিবার সহ নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক অনেকে।