মীর শাহিবুল ইসলাম: গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় তিন মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা করেছে। এসব মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলা ও ভাঙচুরে নেতৃত্বে স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও দুই কর্মীসহ পোশাক কারখানার কয়েকজন স্টাফ ছিল বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। উপ-কমিশনার (অপরাধ) জাকির হাসান জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনকে দুইদিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অপর ৮ জনের মধ্যে একজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর ৭ জনকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস জানান, আমাদের দুঃসময়ে গাজীপুরের সিটি মেয়র ও জেলা প্রশাসকসহ অনেকেই পাশে দাঁড়িয়েছেন। এজন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি মন্দিরের জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক দিয়েছেন।
কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবে খোদা জানান, ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে কাশিমপুর বাজারের শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র, কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস ও পালপাড়া নামাবাজার এলাকার সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল পাল বাদী হয়ে মামলা তিনটি দায়ের করেছেন। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রথম ২০ জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে তাদের দুইদিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে আরও ৮ জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের অনুমতি নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর অপর ৭ জনকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এদের মধ্যে একজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।কাশিমপুর বাজারের পালপাড়া শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পূজারীরা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করছিলেন। সকাল আনুমানিক সোয়া ৭টার দিকে কয়েকশ’ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা লক্ষ্মী ও অসুরের প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
একইদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ১৫০ থেকে ২০০ লোক কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সার্বজনীন মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মন্দিরে থাকা সকল প্রতিমা ভাঙচুর করে উল্টে ফেলে দেয়। হামলার সময় ২০ হামলাকারীকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।