পাটুরিয়া ফেরিঘাট। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই যানবাহন ও যাত্রীদের কোলাহলে মুখরিত থাকতো এই ঘাট এলাকা। কিন্তু ঈদের আর মাত্র দুই থেকে তিনদিন বাকি থাকলেও পাটুরিয়া ঘাট নীরব। যানবাহনও যাত্রীর চাপ নেই। যানবাহন ও যাত্রীর অপেক্ষায় ফেরিগুলো নোঙর করে রাখা হয়েছে ৪টি ঘাটে। সরেজমিন বুধবার সকালে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, যানবাহন ও যাত্রীর চাপ নেই। এখানে চারটি ঘাটের প্রায় সবগুলোই ফাঁকা। বড় বাস কোচ কিংবা ছোট প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলের লম্বা সারি নেই। চারটি ঘাটে ১৮টি ফেরি প্রস্তুত রয়েছে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের অপেক্ষায়। সকালের দিকে কিছু ছোট গাড়ি এবং মোটরসাইকেল পারাপার হলেও দুপুর একটা পর্যন্ত বড় গাড়ি অর্থাৎ বাস কোচ পারাপার হয়েছে খুবই কম। ঘাটে এসে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষায় থাকতে হয়নি।বেলা ১২টার দিকে দেখা গেল পাটুরিয়ায় মোট চারটি ঘাটের মধ্যে ৩ ও ৫ নং ঘাট দিয়ে যানবাহন পারাপার হলেও ২নং এবং ৪নং ঘাট একেবারেই ফাঁকা। ৫ নং এবং ৪ নং ফেরিঘাট টি ঈদের সময় শুধুমাত্র ছোট গাড়ি অর্থাৎ প্রাইভেট কার মাইক্রোবাস পারাপারের জন্য রাখা হলেও বুধবার সকাল থেকে ছোট গাড়ি কম পারাপার হওয়ায় ওই দুটি ঘাট দিয়ে বড় গাড়ি বাস কোচ পারাপার করা হয়েছে।
যানবাহন চালক ও যাত্রীরা জানিয়েছেন, একবছর আগেও ঈদের দুই-তিন দিন আগে পাটুরিয়া ঘাট পাড়ি দিতে তাদের ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকতে হতো। কিন্তু এই ঈদে ব্যতিক্রম। কোন ধরনের ভোগান্তি ছাড়াই তারা ফেরিতে উঠতে পেরে খুশি। দেশের দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার মানুষের রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগের অন্যতম পথ ছিল পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌ রুট। যেখানে প্রতিদিনই যানজট আর যানবাহনের চাপে নাকাল থাকতো। আর ঈদের সময় যানবাহনের লম্বা সারি চলে যেত ঘাট ছাড়িয়ে কম করে হলেও ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ঘন্টার পর ঘন্টা যানবাহন এবং যাত্রীরা পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে বিড়ম্বনার শিকার হত। ঘাট কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হতো যানজট নিরসন করতে গিয়ে। কিন্তু পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে সেই প্রেক্ষাপট এখন আর নেই। পাটুরিয়া ঘাট এখন একেবারেই স্বাভাবিক। যানবাহন এবং যাত্রীর চাপ সাধারণ সময়ে থাকে না। ফেরিগুলোকে দেখা গেছে অলস সময় কাটাতে।এবারের ঈদে ঘাট কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, কোন ধরনের যানজট ছাড়াই নির্বিঘ্নে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার হতে পারবে। পদ্মা সেতুর কারণে এই রুটের আগের সেই জৌলুস নেই বলে ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান।বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ঘাটে ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সালাম বলেন, আসন্ন ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ২০টি ফেরি চলাচল করবে। ১৮টি ফেরির সাথে দুটি সংযুক্তি করায় ফেরি সংকট নেই। এর মধ্যে বড় ফেরি রো রো ১০টি, মাঝারী ইউটিলিটি ৫টি, ছোট কেটাইপ তিনটি ও দুটি ড্রাম ফেরি চলাচল করবে। এছাড়া এই নৌ রুটে যাত্রী পারাপারের জন্য ছোট বড় ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করবে। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ইতিমধ্যে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কোন বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতির ঘাটতি নেই। তিনদিন আগে ও পরে পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সকল ট্রাক পারাপার বন্ধ রাখা হবে। তবে
বৃহস্পতিবার থেকে যানবাহন এবং যাত্রী চাপ পড়বে বলে তিনি জানান।