সুজন হোসেন রিফাত মাদারীপুর প্রতিনিধি: দুদক পরিচয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের ভয়ে দেখিয়ে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিতো লাখ লাখ টাকা। বিকাশের মাধ্যমে টাকা নেয়ার পর সীমকার্ড ও অবস্থান পরিবর্তণ করতো চক্রটি। কিন্তু টানা ১৫দিনের অভিযানে মাদারীপুরের রাজৈরে এই চক্রের মূল হোতাসহ দুইজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বেড়িয়ে আসে ভয়ংকর তথ্য।
(৭ মার্চ) মঙ্গলবার বিকেলে মাদারীপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাসুদ আলম। আটক আনিসুর রহমান বাবুল রাজৈর উপজেলার লুন্দী গ্রামের শামসুল হক মিয়ার ছেলে ও বাবুলের সহযোগি চাচাচো ভাই হাসিবুল মিয়া একই গ্রামের মৃত জয়নাল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, পড়াশুনা ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়–য়া আনিসুর রহমান বাবুল ভাল গানও করেন। এর সাথে তার রয়েছে আরো একটি পরিচয়। ভুয়া দুদক কমিশনার সেজে ৬মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন মানুষের সাথে করছেন প্রতারনা। বাবুলের টার্গেট থেকে বাদ যায়নি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ বড় বড় ব্যবসায়ী। মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এসব কর্মকর্তার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে আদায় করে মোটা অংকের টাকা। অভিযোগের ভিত্তিতে টানা ১৫দিনের অনুসন্ধানে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয় মূলহোতা বাবুল ও তার সহযোগি চাচাচো ভাই হাবিবুল মিয়া। আটক দুইজন ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সারা দেশেই এই প্রতারণার লিপ্ত ছিলো। অভিযান পরিচালনাকালে ঘটনাস্থল থেকে মোবাইল, একাধিক সীমকার্ড ও নগদ ১০৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। এদিকে মামলা দায়ের শেষে আটককৃতদের পাঠানো হয় আদালতে।
অভিযুক্ত আনিসুর রহমান বাবুল বলেন, যারা দুর্নীতি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করতো, শুধুমাত্র তাদের টার্গেট করেই মোবাইলে কল দিয়ে ভয় দেখাতাম। পরে কেউ কেউ বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিতো। আবার অনেকেই দিতো না। আমি ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এইসাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলার গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রায়হান সিদ্দিকী শামীম বলেন, এই চক্রের সাথে আরো বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। তাদের ধরতে কাজ চলছে। শিগগিরই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেয়া হবে।