চীনে প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ আরও বাড়াচ্ছে রাশিয়া। এ বছরে চীনে ১০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহের পাশাপাশি অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করার বিষয়ে চুক্তি করেছে দেশ দুটি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে আরটি জানিয়েছে, সুদূর পূর্ব রুট ব্যবহার করে রাশিয়া থেকে অতিরিক্ত প্রাকৃতিক গ্যাসে সরবরাহের বিষয়ে মস্কো ও বেইজিং একটি চুক্তি করেছে। বৃহস্পতিবার ( ৯ ফেব্রুয়ারি) এক ঘোষণায় এ কথা জানিয়েছে রাশিয়ায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে তারা চুক্তিটির অনুমোদনের জন্য একটি খসড়া তৈরি করেছে। যা শিগগিরিই রাশিয়ার সংসদের নিম্নক্ষক স্টেট ডুমা উত্থাপন করা হবে।
বর্তমানে ৩০ বছর মেয়াদী একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় পাওয়ার অব সাইবেরিয়া পাইপলাইনের দিয়ে চীন গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। এ পাইপলাইনটি রাশিয়ার পূর্ব রুটের একটি অংশ। ২০১৯ সালে এ পাইপলাইন ব্যবহার করে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। ২০২৫ সাল নাগাদ এই পাইপলাইনটির প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের বার্ষিক সক্ষমতা ৩৪ বিলিয়ন ঘনমিটার পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূদূর পূর্বের রুটটি দিয়ে সাখালিন দ্বীপ থেকে চীনে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ প্রকল্পটি আন্তঃসীমান্ত অংশে ইতিমধ্যে চালু থাকা রাশিয়ান পাইপলাইন ও চীনের হুলিনের শহরের মধ্যে উসুরি নদী জুড়ে নির্মাণ করা হবে। পূর্ণ সক্ষমতায় এই রুটটি দিয়ে বার্ষিক ১০ ঘনমিটার রাশিয়ান পাইপলাইন গ্যাসে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
গত বছর ইউঝনো-ক্রিন্সকোয়ে গ্যাস ক্ষেত্রে ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এতে সমস্যায় পড়ে সাখালিন-৩ গ্যাস প্রকল্পের কাজ। এতে রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় এনার্জি জায়ান্ট গ্যাজপ্রম স্থানীয় সাব-সি গ্যাস প্রডাক্টশন কমপ্লেক্স (এসপিসি) তৈরির কাজ শুরু করতে বাধ্য হয়। কাজেই, এ রুটটি চালু হলে আরও সময় লাগতে পারে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছিল।
তবে গ্যাজপ্রম চলতি মাসের শুরুতেই ঘোষণা দিয়েছে যে প্রকল্পটির কাজ নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে। তাছাড়া এ বছরের শেষের দিকে এই রুট ব্যবহার করে গ্যাস সরবরাহ করাও শুরু হবে।
এদিকে পাওয়ার অব সাইবেরিয়া ২ পাইপলাইনের মাধ্যমে মঙ্গোলিয়া দিয়ে চীনে গ্যাস সরবরাহের সম্ভাবনা মূল্যায়ন করছে গ্যাজপ্রম। এ পাইপলাইনটির নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এটি দিয়ে বার্ষিক ৫০ বিলিয়ন ঘনমিটার পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
এসব পাইপলাইন যখন পুরোপুরি চালু হবে, তখন চীনে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ঘনমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।