যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা শুরু হয়েছে। এতে যশোর শহর জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। বেলা তিনটার কিছু আগে প্রধানমন্ত্রী জনসভার মঞ্চে উপস্থিত হন।
আজ দুপুর একটায় যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভা শুরু হয়েছে। জেলা সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ প্রমুখ।
এর আগে দুপুর ১২টার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় জনসভাস্থল। তবে এখনো দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে মানুষ জনসভাস্থলের দিকে ছুটছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে জনসভাস্থল।
আজ সকাল ৮টার পর থেকে মানুষ জনসভামুখী হতে শুরু করে। তাদের স্বাগত জানাতে রঙিন হয়ে উঠেছে দেশের প্রথম ডিজিটাল জেলা যশোর। সকাল থেকেই জনসভাস্থল অভিমুখে মানুষের ঢল দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সাদা গেঞ্জি ও লাল-সবুজ টুপি পরে পুরুষ কর্মী-সমর্থকেরা এবং লাল পাড়ের সবুজ শাড়ি পরে নারী কর্মী-সমর্থকেরা এসব মিছিলে অংশ নেন। সকাল থেকে যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কে এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কয়েক দফায় তল্লাশির পর দর্শকদের সভাস্থলে প্রবেশের অনুমোদন দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর সাংবাদিকদের বলেন, জনসভাস্থলে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ দেয়ার ৫০ বছর পর সেই যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা। দেশের দক্ষিণবঙ্গের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যগত প্রভাবে ‘নতুন স্বপ্ন আর প্রত্যাশার ডালি’ নিয়ে আসছেন প্রধানমন্ত্রী-এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের।
খুন, হত্যা, ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া ছাড়া বিএনপি দেশের মানুষের জন্য কিছু করেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি জামায়াত কী দিয়েছে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দিয়েছে অস্ত্র, দিয়েছে খুন। এই যশোরে শামসুর রহমান, মুকুলকে হত্যা করা হয়েছে। খুলনায় মঞ্জুরুল ইমাম, মানিক শাহ, বালু, সাংবাদিকদের একে একে হত্যা করা হয়েছে। শুধু রক্ত আর হত্যা ছাড়া বিএনপি তো আর কিছু দিতে পারেনি দেশের মানুষকে! নিজেরা লুটপাট করেছে। নিজেরা মানুষের অর্থ পাচার করেছে। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে নিজেদের উদরপূর্তি করেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, তারা শুধু পারে মানুষের রক্ত চুষে খেতে। মানুষের মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে বিএনপি নিজেদের উন্নয়ন করেছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
এসময় তিনি আরও বলেন, অপরাধ করেছে বলেই খালেদা জিয়া ও তার সন্তান তারেক এখন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। জিয়া যখন মারা যায়, বললো কিচ্ছু থুয়ে যায়নি। ভাঙা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জি। সেই ছেঁড়া গেঞ্জি হয়ে গেল ফেঞ্চ শিফন আর ভাঙা বাকশো হয়ে গেল জাদুর বাকশো, যা দিয়ে কোকো তারেক হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে আর পাচার করেছে বলেই তারা শাস্তি পেয়েছে।
অস্ত্র চোরাকারবারি করতে গিয়ে তারেক জিয়া ধরা খেয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তার সাজা হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকেসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করতে চেয়েছিল। বারবার এ ধরনের মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। আর খালেদা জিয়া জনগণের অর্থ শুধু না, এতিমের অর্থ মেরে, জিয়া অরফানেজের অর্থ মেরে সেও আজ সাজাপ্রাপ্ত। আর সাজাপ্রাপ্ত যে দলের নেতা, সে দল জনগণকে কী দেবে বলেন!
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজবে কান দেবেন না, বিএনপির কাজই হচ্ছে গুজব ছড়ানো। নৌকা মার্কায় ভোট দিন। সেবা করার সুযোগ চাই। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে পাশে থাকতে হবে। আমরা শান্তি চাই, উন্নতি চাই। প্রত্যেকটা জায়গায় দেশ এগিয়ে যাক, সেটিই প্রত্যাশা। যতদিন বেঁচে আছি, দেশের জন্য কাজ করে যাবো।