রাশিয়ার সেনারা আত্মসমর্পণ করে একে একে মাটিয়ে শুয়ে পড়ে। কিন্তু এরপর তাদের আটক না করে সবার মাথায় গুলি করে হত্যা করে ইউক্রেনের সেনারা। শুক্রবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এমনই এক ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে রাশিয়া।
বিবিসি জানিয়েছে, এই ঘটনা লুহানস্কের মাকিভকা গ্রামের এবং খুব সম্ভবত গত ১২ই নভেম্বর এই হত্যাকাণ্ড চলে। সে সময় ইউক্রেনপন্থী টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলো থেকে এক দল রুশ সেনার মরদেহের ছবি প্রকাশ করা হয়। তবে তারা কীভাবে মারা গেছে তা তখন জানা যায়নি। কিন্তু ১৭ই নভেম্বর ইউক্রেনীয়দের প্রকাশ করা আরেক ভিডিওতে ওই হত্যাকাণ্ডের পূর্বের অবস্থার বিবরণ জানা যায়। টুইটারে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, রুশ সেনারা একটি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে এসে একে একে মাটিতে শুয়ে পড়ছে বা আত্মসমর্পণ করছে। আর এতেই জানা যায় যে, এই সেনাদের যুদ্ধক্ষেত্রে নয় বরঞ্চ আত্মসমর্পণের পর হত্যা করা হয়েছিল।
এরপরেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউক্রেনের সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঠাণ্ডা মাথায় এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। তাদের সবাইকে মাথায় গুলি করে মারা হয়।আর এটিই ইউক্রেনের প্রথম এবং একমাত্র যুদ্ধাপরাধ নয়। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যুদ্ধের সময় আত্মসমর্পণ করা সেনাদের আহত করাও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এদিকে এখনও ইউক্রেনের তরফ থেকে এই ভয়াবহ অভিযোগ সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। রাশিয়াপন্থী ব্লোগাররা ওই ইউক্রেনীয় সেনাদেরও চিহ্নিত করে ছবি প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, ইউক্রেনের ৮০তম এয়ারবর্ন অ্যাসল্ট ব্রিগেডের সদস্যরাই এই হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত।
এই সপ্তাহে ইউক্রেনে অবস্থিত রাশিয়ার মিশন থেকে ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশের বিরুদ্ধেই বন্দী নির্যাতনের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। যুদ্ধের প্রথম থেকেই দুই দেশের বিরুদ্ধেই একাধিক যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এসেছে। দুই পক্ষই একে অপরকে যুদ্ধের নিয়মনীতি না মানার জন্য দায়ী করছে। যদিও গত ৯ মাসের যুদ্ধে বন্দী বিনিময় খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয় ছিল। কিন্তু এভাবে রাশিয়ার সেনাদের হত্যার বিষয়টি সামনে আসার পর এই প্রক্রিয়া হুমকিতে পড়েছে।