সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

ল্যাবে তৈরি রক্ত মানুষ বাঁচাবে !

Reporter Name
Update : সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০২২, ৯:২০ অপরাহ্ন

আপনার রক্তের গ্রুপ ও-পজেটিভ বা ও-নেগেটিভ! রক্তের প্রয়োজন হলে সীমাহীন বিড়ম্বনায় ভুগতে হয় আপনার। সম্ভবত এসব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে বা ল্যাবে তৈরি করেছেন রক্ত। বিশ্বে প্রথম ল্যাবে তৈরি করা এই রক্তের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা হচ্ছে এখন। বৃটিশ গবেষকরা বলেছেন, বিশ্বে প্রথমবার এমন রক্ত ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে পরিমাণ অল্প। হতে পারে কয়েক চা-চামচের সমান। এই পরিমাণ রক্ত মানুষের শরীরে প্রয়োগ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে যে, তা কি ভূমিকা পালন করে। কিভাবে রক্তের দায়িত্ব পালন করে। যদি এই রক্ত শরীরে ম্যাচ না করে তাহলে শরীর তাকে প্রত্যাখ্যান করে শুরুতেই। ফলে এই রক্ত দিয়ে চিকিৎসা ব্যর্থ হয়। এই অবস্থায় দেখা গেছে রক্তের সুপরিচিত গ্রুপ- এ, বি, এবি এবং ও গ্রুপের সঙ্গে ভালভাবে ম্যাচ খায় বা খাপ খায় ল্যাবে তৈরি করা এই রক্ত। এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলের প্রফেসর অ্যাশলে টয়ই। তিনি বলেন, রক্তের কিছু গ্রুপ আসলেই বিরল। অনেক ক্ষেত্রে একটি দেশে মাত্র ১০ জন মানুষ ওই গ্রুপের রক্ত দান করার সক্ষমতা রাখেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, এ গবেষণায় সম্মিলিতভাবে জড়িত বিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন এবং এনএইচএসের ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট। তারা ফোকাস করেছেন লোহিত রক্তকোষের দিকে, যা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যায় সারা দেহে। গবেষকরা রক্তের সামান্য নমুনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে স্থিতিস্থাপক স্টেম সেলকে ম্যাগনেটিক বিডস দিয়ে আলাদা করা হয়। এসব সেল লাল রক্তকোষে পরিণত হওয়ার সক্ষমতা রাখে। স্টেম সেলকে ল্যাবরেটরিতে বিশালাকায় আকারে বর্ধিত হতে অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়। গাইড দেয়া হয়, যেন সেগুলো লোহিত রক্তকোষে পরিণত হয়।

এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগে প্রায় তিন সপ্তাহ। এ প্রক্রিয়ায় দেখা যায় শুরুতে প্রায় ৫ লাখ স্টেম সেল রূপান্তরিত হয়ে ৫০০০ কোটি লোহিত রক্তকোষে পরিণত হয়েছে। এরপর এই রক্তকে ফিল্টার করে সেখান থেকে পাওয়া যায় প্রায় ১৫০০ কোটি লোহিত রক্তকোষ। এসব রক্তকোষ ট্রান্সপ্লান্টে ব্যবহারের উপযোগী। প্রফেসর টয়ই বলেন, ভবিষতে এ প্রক্রিয়ায় আমরা অনেক রক্ত তৈরি করতে পারবো। তাই আমার মাথায় যে পরিকল্পনা ঘুরছে তা হলো একটি পুরো রুমে মেশিন দিয়ে পূর্ণ থাকবে। তা অব্যাহতভাবে দাতার রক্ত থেকে নতুন নতুন রক্ত তৈরি করবে।

প্রথম ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় প্রথম যে দু’জনকে এই রক্ত দেয়া হয়েছে তারা হলেন কমপক্ষে ১০ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবকের অন্যতম। তারা ৫ থেকে ১০ মিলিলিটারের দুটি ডোনেশন ব্যবহার করবেন। এ দুটি ডোজের মধ্যে ব্যবধান থাকবে কমপক্ষে চার মাস। একটি ডোজে দেয়া হবে সাধারণ রক্ত। অন্য ডোজে দেয়া হবে ল্যাবে তৈরি রক্ত। এই রক্তের সঙ্গে ট্যাগ করে দেয়া হয়েছে তেজস্ক্রিয় পদার্থ। এমন তেজস্ক্রিয় পদার্থ মাঝে মাঝে মেডিকেলে ব্যবহার করা হয়। ফলে বিজ্ঞানীরা দেখতে পাবেন এই রক্ত কতদিন শরীরে স্থায়ী হয়। আশা করা হচ্ছে ল্যাবে তৈরি রক্ত সাধারণ রক্তের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হবে।

লোহিত রক্তকোষ সাধারণত দেহে স্থায়ী হয় প্রায় ১২০দিন বা চার মাস। তারপরই তা বদলে ফেলতে হয়। সুস্থ মানুষের শরীরে তা এমনিতেই বদলে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host