ইউক্রেনে যুদ্ধ শেষ করতে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি জানিয়ে হোয়াইট হাউসকে চিঠি লিখেছিলেন ডেমোক্রেট আইনপ্রনেতাদের একাংশ। তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হওয়ায় তারা সেই চিঠি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রগতিশীল ডেমোক্রেট আইনপ্রনেতাদের ওই গ্রুপটি জানায়, তারা চিঠির মাধ্যমে যে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তা সবাই ভুল বুঝেছে। বিরোধী রিপাবলিকান দলের সদস্যরা ইউক্রেনকে অস্ত্র দেয়া অব্যাহত রাখতে চায় না। এরমধ্যে ডেমোক্রেট দলের মধ্য থেকেও রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি তোলাকে অনেকে রিপাবলিকানদের দাবিকে সমর্থন হিসেবে দেখছেন।
তবে ওই ডেমোক্রেট গ্রুপটির নেতা প্রমিলা জয়পাল বলেন, ওই চিঠি কয়েক মাস আগের এবং এখন সেটিকে কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই প্রকাশ করা হয়েছে। ওই চিঠির পর থেকে ডেমোক্রেট দলের মধ্যে অস্থিরতা দেখা গেছে। সামনের মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এরমধ্যে ইউক্রেন ইস্যুতে ডেমোক্রেটদের মধ্যে বিভক্তি দলের জন্য খারাপ সংবাদ। ওই চিঠিতে ডেমোক্রেট আইনপ্রনেতারা ‘রাশিয়ার আগ্রাসী যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের যৌক্তিক সংগ্রামের প্রতি’ বাইডেনের অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন। তারা স্বীকার করেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সাফল্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক, সামরিক ও মানবিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তবে আইনপ্রণেতারা চিঠিতে আরও জানান, ইউক্রেনের জনমানুষের ওপর ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টির পাশাপাশি বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কটের ঝুঁকি তৈরি এবং জ্বালানি ও শস্যের মূল্য বাড়ানোর মাধ্যমে দারিদ্র্য সৃষ্টিকারী এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে কূটনৈতিক উদ্যোগও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলের অংশ হওয়া উচিৎ। এই চিঠি সম্পর্কে প্রথম খবর দেয় দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা।
২০২২ এর জুনে একটি সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন স্বীকার করেন, যে এই সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হতে পারে। ফেব্রুয়ারিতে বিনা উসকানিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র মানবিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা বাবদ ৬ হাজার কোটি ডলার পাঠিয়েছে। সোমবারের চিঠিতে কংগ্রেসের প্রগতিশীল সদস্যরা সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দেন।
বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে লেখা ওই চিঠি গত জুন মাসে স্বাক্ষর করা। এতে স্বাক্ষর করেছেন ৩০ আইনপ্রনেতা। বাইডেন প্রশাসন প্রথম থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার পক্ষে। সেখানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার দাবি তার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তবে জয়পাল মঙ্গলবার বলেন, তিনি এখনও বিশ্বাস করেন কূটনীতির মাধ্যমেই এই যুদ্ধ শেষ করা প্রয়োজন। তবে এমন সময় এই চিঠি প্রকাশিত হয়েছে যখন মনে হচ্ছে তারা রিপাবলিকানদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। এটি শুধুমাত্র সময়ের ভুলের কারণে। এদিকে রিপাবলিকান আইনপ্রনেতা কেভিন ম্যাককার্থি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, নভেম্বরে যদি তার দল ক্ষমতা পায় তাহলে ইউক্রেনের জন্য আর কোনো ব্ল্যাংক চেক থাকবে না।