সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

দেশে কৃত্রিম হার্ট স্থাপন

Reporter Name
Update : শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০৭ অপরাহ্ন

এই ডিভাইস কিনতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হবে। আনুষঙ্গিক সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মতো খরচ হবে। যন্ত্রটির মেয়াদ ১৭ থেকে ২০ বছর। বিপুল পরিমাণ খরচের বিষয়টি তুলে ধরে এই চিকিৎসক বলেন, ‘এই যন্ত্র বসানো মানে হচ্ছে, হার্টের মধ্যে একটা বিএমডব্লিউ স্থাপনের সমান।’

দেশে প্রথমবারের মতো যে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড স্থাপন করা হয়েছে, সেটির অতি উচ্চমূল্যের কারণে এই সুবিধা উচ্চবিত্ত শ্রেণিতেই সীমিত থাকতে পারে।

যে চিকিৎসক এক রোগীর হৃৎপিণ্ডে এই যন্ত্রটি বসিয়েছেন, তিনি জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে চিকিৎসা ব্যয় লাগবে দেড় কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল যন্ত্রটির দাম এক কোটি ২৬ লাখ টাকা।

যন্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানিই উৎপাদন করে। এটি ১৭ থেকে ২০ বছর চলতে পারে, তবে রোগীর হৃৎপিণ্ড সচল থাকবেই এমন নয়। চিকিৎসকের ভাষ্যে, ‘মানুষ কত দিন বাঁচবে, সেটা আল্লাহর ওপর।’

বুধবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ৪২ বছর বয়সী এক নারীর হৃৎপিণ্ডে যন্ত্রটি বসানো হয়, যে অপারেশনকে বলা হচ্ছে ‘মেকানিক্যাল হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট।’

হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন ও কার্ডিয়াক সেন্টারের পরিচালক জাহাঙ্গীর কবির এই অপারেশনের নেতৃত্ব দেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

তিনি বলেন, ‘মেকানিক্যাল হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড বলতে আমরা বলতে পারি, যাদের হৃৎপিণ্ড প্রায় নিষ্ক্রিয়, সেই নিষ্ক্রিয় হৃৎপিণ্ড সক্রিয় করতে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস বসানো হয়।’

জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ‘এই ডিভাইস কিনতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হবে। আনুষঙ্গিক সব মিলিয়ে দেড় কোটি টাকার মতো খরচ হবে। যন্ত্রটির মেয়াদ ১৭ থেকে ২০ বছর।’

বিপুল পরিমাণ খরচের বিষয়টি তুলে ধরে এই চিকিৎসক বলেন, ‘এই যন্ত্র বসানো মানে হচ্ছে, হার্টের মধ্যে একটা বিএমডব্লিউ স্থাপনের সমান।’

এত খরচের কারণ কী- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে এবভ নামে একটি কোম্পানি এটি উৎপাদন করে। তারাই এর দাম ঠিক করেছে।’

টাকার সংস্থান করতে পারলে এই যন্ত্রটি হার্ট পুরোপুরি অচল হয়ে যাওয়া রোগীর জীবন ফেরাতে পারে। চিকিৎসক জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চার ঘণ্টার এই পদ্ধতির মাধ্যমে হার্টফেইল হওয়া মানুষ নিরাময়ের সুযোগ পাবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ৪২ বছর বয়সী এক নারীর হৃৎপিণ্ডে মেকানিক্যাল হার্ট বা এলভিএডি বসানো হয়েছে। তিনি শেষ পর্যায়ের বা তীব্র হার্ট ফেইলিওরসহ হৃৎপিণ্ডের নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। দেশে-বিদেশে নানা চিকিৎসার পরও তার হৃৎপিণ্ড বা হার্ট প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়ছিল।

এই অপারেশনকে দেশে চিকিৎসার নবযুগ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘উন্নত বিশ্বে এর একমাত্র চিকিৎসা আরেকটি সুস্থ হার্ট দিয়ে প্রায় অকার্যকর হার্টটি প্রতিস্থাপন। তবে যদি সুস্থ হার্ট না পাওয়া যায় কিংবা পেতে দেরি হচ্ছে এবং হার্টের অবস্থা যদি দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে তবে মেকানিক্যাল হার্ট ইমপ্ল্যান্ট করা হয়।

‘এতে রোগীর হার্ট কিছুটা বিশ্রাম পায় এবং সমস্ত শরীরের রক্ত চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে শরীরে অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যেমন কিডনি, লিভার ইত্যাদি সেরে ওঠার সুযোগ পায়।’

তিনি জানান, তীব্র হার্ট ফেইলিওরে আক্রান্ত কিছু রোগী হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের উপযুক্ত না হলে তাদের জন্য একমাত্র বিকল্প এই প্রতিস্থাপন, যার মাধ্যমে বাকি জীবন সুস্থভাবে অতিবাহিত করতে পারেন।’

রোগী এখন আইসিইউতে আছেন। তাকে আরও ৪ থেকে ৫ দিন রাখা হবে। তবে যেহেতু প্রথম সার্জারি, তাই আরও কয়েকটি দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

ইউনাইটেড হাসপাতালের চিফ কার্ডিয়াক সার্জন বলেন, ‘এই কাজ এক দিনে সম্ভব হয়নি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ১৫ বছর সময় লাগছে। …এর আগে একটা রোগীর মেকানিক্যাল হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, ট্রান্সপ্ল্যান্টের আগের দিন মারা গেছেন। এমন অনেক ঘটনা ঘটছে। তবে আমাদের অনেক কষ্ট ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই কাজ আলোর মুখ দেখল।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host