সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:১৯ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

লালমনিরহাটে আদিতমারী আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী 

মোঃ গোলাপ মিয়া লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি
Update : রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ন

মোঃ গোলাপ মিয়া লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাট -২ সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি উপজেলা হচ্ছে আদিতমারী আর এই  উপজেলার আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন কে কেন্দ্রে করে একক আধিপত্য বিস্তার ও সংঘর্ষে আশঙ্ক জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলন স্থান ত্যাগ করে সার্কিট হাউসে অবস্থা নেয়। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর অনুসারীগণ সম্মেলন স্থানে নীরবতা ভূমিকা পালন করেন।আর উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারীগণ  মাঠ দখল করে রাখেন।এতে করে আদিতমারী উপজেলা  আওয়ামীলীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পরে।সর্বশেষ গত ০৮ অক্টোবর আদিতমারী উপজেলা সম্মেলন কে কেন্দ্রকরে কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও তার লোকজন ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে উপজেলা সম্মেলনের প্রস্তুতিনেয়।বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ব্যাপক লোকজন নিয়ে আসলেও সম্মেলন মাঠে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী হয়ে যায়। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিকেল ৪ ঘটিকায় সম্মেলন মঞ্চে উঠার পরেই  উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস ফারুক ও তার ছোট ভাই মাহমুদ ওমর চিশতী হাজার হাজার লোকজন নিয়ে সম্মেলনে মাঠে উপস্থিত হয়। মূল মঞ্চে উপজেলা চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস ফারুকের বসার আসন না দিলেও মঞ্চের সামনে সাধারণ জনগণদের সাথে বসে প্রথম অধিবেশন শুনতে হয়েছে।এতে  নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। ফারুক ও চিশতী নেতৃত্বে পুরো মাঠ চিশতী চিশতী বলে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। এক পর্যায়ে সমাজকল্যান মন্ত্রীর লোক জন আস্তে আস্তে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ফারুক ও চিশতীর অনুসারীদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতায় শান্ত হওয়ার জন্য বলেন। এবং নেতারা বুঝতে পারচ্ছেন পুরো সম্মেলন মাঠ দখলে ছিল সাধারন সম্পাদক এর  প্রার্থী মাহমুদ ওমর চিশতীর।এদিকে লালমনিরহাট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন এমপি, ও সাধারন সম্পাদক অ্যাডঃ মতিয়ার রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলার আওয়ামীলীগের সভাপতি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডঃসফুরা বেগম রুমির  কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক প্রথম অধিবেশন তৃণমূল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে  শেষ করেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে আলোচনা করে  সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থীর নাম নিয়ে দীর্ঘ ৩ ঘন্টা ধরে সমঝোতা করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়  কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ । প্রাথমিক আলোচনা ও মাঠের অবস্থান বুঝে সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে একটি ঐক্যের  প্রস্তাব দেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সিদ্ধান্তে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ও জেলা কমিটি ঐক্যের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন।পরে মাঠের বাস্তব চিত্রের কথা চিন্তা করে কেন্দ্রীয় নেতারা কর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন লালমনিরহাট সার্কিট হাউসে ফলাফল ও কমিটি ঘোষণা করা হবে। এই ঘোষণা শুনে উত্তেজিত হয়ে উঠে নেতাকর্মী সেই সাথে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তুঁপের মুখে পুলিশ পাহারায় সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সার্বিক  অবস্থান ও সম্মেলনের মাঠের অবস্থান কথা বিবেচনা করে  কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় সম্মেলনের  কমিটি ঘোষনা দিতে হবে ।এদিকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী নাম ঘোষণা করার জন্য  কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের চাপ সৃষ্টি করেন।এই নিয়ে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সহ তার অনুসারীদের নিয়ে সমঝোতা পৌঁছাতে পারেননি। এদিকে কমিটি ঘোষণা করতে দেরি হলে রাত ৩ ঘটিকায় সার্কিট হাউজে হাজার খানিক নেতৃবৃন্দ সহ চিশতী ও ফারুক দুই ভাই  সার্কিট হাউসের বাহিরে অবস্থান নেয়। লালমনিরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মতিয়ার রহমান  জানায় সভাপতি পদে সারপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সেলিম হায়দার, ভাদাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কৃষ্ণকান্ত রায় বিধুর, ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, প্রার্থী হয়েছেন এদের মধ্যে পূর্বে থেকে নির্ধারিত  সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ্ব নূরুজ্জামান আহমেদ এমপির পছন্দের ব্যক্তি  সভাপতি পদে  মোহাম্মদ আলী নাম চূড়ান্ত করে রেখেছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদে রফিকুল আলম এর নাম চূড়ান্ত করে রেখেছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে মাঠের অবস্থান ও জনপ্রিয়তা দিক বিবেচনা করে  মাহমুদ উমর চিশতীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম চূড়ান্ত করেন।এদিকে সভাপতি হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী যাকে চূড়ান্ত করেন সেই ব্যক্তি আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন এই নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পছন্দের ব্যক্তি বিতর্কিত হয়ে পরেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কাছে মন্ত্রীর পছন্দ ব্যক্তি আমলনামা   আদিতমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে । কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থে মাঠের অবস্থান দেখে মাহমুদ ওমর চিশতী কে সাধারণ সম্পাদক পদে কেন্দ্রীয় কমিটি চূড়ান্ত করেন এতে করে জেলার নেতৃবৃন্দ বিরোধিতা করে বলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থী রফিকুল আলমের  নাম চূড়ান্ত করেছেন। তাকে সাধারণ সম্পাদক পদে হতে বাদ দেওয়া যাবে না। এই মর্মে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে প্রকাশ করেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন  বিএনপি থেকে আসা মোহাম্মদ আলী কে সভাপতি দিলে বিতর্কিত হবে তাকে সভাপতি না দিয়ে রফিকুল আলম কে সভাপতি পদে দেওয়া হোক এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মাহমুদ উমর শিচতী কে দেওয়া হোক এই প্রস্তাব করেন সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের এই  সিদ্ধান্ত  রাজি না হয়ে  সমাজকল্যাণ মন্ত্রী অনুসারীরা এবং রফিকুল আলম নিজ থেকে বলেন  সভাপতি প্রার্থী হবে  না  সাফ জানিয়ে দিলে তখন কেন্দ্রীয় কমিটি নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সমাধানের লক্ষ্যে রফিকুল আলম কে বাদ দিয়ে চিশতী  কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষনা দিতে চাইলে তখন রফিকুল আলম সার্কিট হাউসে উত্তেজিত হয়ে উঠে । যখন রফিকুল আলম বুঝতে পারে  তার পদ থাকছে না তখন পুনরায়  সভাপতি প্রার্থী হতে ইচ্ছে পোষন করেন ।তখন নতুন করে আবার জটিলতা সৃষ্টি করে। তখন অন্যান্য সভাপতি প্রার্থী প্রতিবাদ করে বলেন রফিকুল আলম সভাপতি প্রার্থী হয়নি তাকে কেন সভাপতি দেওয়া হবে। মুহূর্তের মধ্যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ সার্কিট হাউসে লাঠিচার্জ করে সার্কিট হাউস ফাঁকা করেন।
এসময় সমাজকল্যান মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি বলেন এটা আমার সংসদীয় আসন তাই আমার কথায়  সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত করতে হবে।  না হলে আমি সার্কিট হাউস থেকে চলে যাব এবং দলের সভানেত্রীর কাছে আমি বিচার দিব । এই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেউ  স্বাক্ষর করবেন  না।এই বলে জেলা সভাপতি মোতাহার হোসেন এমপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলহাজ্ব নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডঃসফুরা বেগম রুমি সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে  যায়। সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপি বলেন সাধারণ সম্পাদক পদে মাহমুদ উমর চিশতী নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্তে কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাংগঠনিক রিপোর্ট জানানো হবে,  মাঠের অবস্থানের কথা বিবেচনা করে বিষয়টি অবগত করা হবে। রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শফিক  বলেন আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে যে সকল নেতা কর্মী জন্মগতভাবে আওয়ামীলীগ করে আসছে আজ একটি মহল ক্ষমতা অপব্যবহার করে ফারুক ও চিশতীদের আওয়ামীলীগের পদ পদবী থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দলের প্রদানের সাথে কথা বলা হবে।তৃনমুলের নেতা কর্মীদের নিয়ে একসাথে কাজ করলে আওয়ামী লীগ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।উপস্থিত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মেনে নিলে দলের জন্য ভালো হতো। এই দ্বন্দ্বের প্রভাব সংসদীয় নির্বাচনে পড়বে বলে মনে করেন। আদিতমারী উপজেলা ও কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন কে কেন্দ্রে করে দলের মধ্যে  দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host