বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৪ পূর্বাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

মাগুরায় খুনের গ্রামের লোকেরা বাড়ি ছাড়ছে

Reporter Name
Update : শনিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক:  মাগুরা সদর উপজেলার জগদল গ্রামে চাঞ্চল্যকর ৪ খুনের ঘটনায় গোটা গ্রামজুড়ে চলছে আতঙ্ক। পুনরায় সহিংসতা ও লুটপাটের ভয়ে যে যার মতো মালামাল নিয়ে বাড়ি ছাড়ছে।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) যে ৪ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর গ্রাম্য মাতবর সবুর মোল্লা, তার আপন ভাই কবির মোল্লা ও আপন চাচাতো ভাই রহমান মোল্লা এবং ২৫ বছরের যুবক ইমরান। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) জগদল গ্রামে দেখা গেছে, গোটা গ্রামজুড়ে চলছে আতঙ্ক। জগদল গ্রামেই ৩ শতাধিক পরিবারের বসবাস। এ গ্রামের হাকিমের মোড়, সর্দারপাড়া, মাঝিবাড়ি, দমদমা পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ প্রহরায় রয়েছে। তবু অধিকাংশ বাড়ির পুরুষ মানুষ বাড়ি ছেড়েছে। অন্যদিকে বাড়ির নারী সদস্যরা লুটপাট আতঙ্ক ও পুনরায় সংঘর্ষের ভয়ে ঘরের মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।

জগদল সর্দারপাড়া এলাকার জাকির হোসেন, সায়েরা খাতুনসহ অন্যরা জানান, এলাকায় লোকজন নেই একথা ঠিক। কিন্তু এ ধরনের খুনের ঘটনার পর অতীতে অন্য এলাকার দুর্বৃত্তরা এলাকায় এসে বাড়ি ঘর লুটপাট করেছে। এ কারণে তারা বাড়িতে মালামাল রাখতে সাহস পাচ্ছেন না। নিহতের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। বিশেষ করে সবুর মোল্লাসহ একই পরিবারের ৩ জন খুন হওয়ায় গ্রামের গোটা মানুষ ভিড় করেছেন সেখানে। তবে উপস্থিতদের অধিকাংশই নারী।

এলাকায় মোড়ে মোড়ে পুলিশ প্রহরা দেখা গেছে। নিরাপত্তার বিষয়ে সেখানে উপস্থিত মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘আমরা গ্রামের সর্বসাধারণকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ যাতে আতঙ্কিত হয়ে গ্রাম না ছাড়ে সে জন্যে সবাইকে অবহিত করছি। এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যে কোনো পুনরায় সহিংসতা প্রতিরোধে নজরদারি বহাল আছে’।

এদিকে সবুর মোল্লার স্ত্রী মেলিনা বেগমসহ পরিবারে দাবি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে নজরুলসহ তার সমর্থকেরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে জগদল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটি মোল্লাদের গোষ্ঠীগত বিরোধ। আমি চেয়ারম্যান হবার আগে থেকেই চলছে। সামনে নির্বাচন, এ কারণে আমার প্রতিপক্ষরা এর সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কুৎসা রটাচ্ছে। অথচ আমি গত ১ মাস ধরে এটির মিমাংসার জন্য চেষ্টা করেছি। এমনটি সদর থানায় ডেকে নিয়ে মুচলেকা দেওয়ার ব্যবস্থা পর্যন্ত নিয়েছি’।

সর্দারপাড়া মসজিদের ইমাম বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই নজরুল মোল্লা ও সৈয়দ আলী হাসানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। আমি শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় এ বিষয়ে বয়ান দিয়েছি। দু’পক্ষের কাছে করজোড়ে শান্ত থাকা ও বিরোধে না জড়ানোর জন্য কাকুতি মিনতি করেছি। কিন্তু বিকেলেই এ ঘটনা ঘটল’।

এদিকে এলাকার সামাজিক দলাদলির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য সরকার দলীয় নেতাদের নেতৃত্বে পরস্পর বিরোধী একটি একটি সামাজিক দল গঠিত হয়ে থাকে। যেখানে আওয়ামী লীগ বিএনপি উভয় দলের সদস্যরাই থাকেন। এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিরোধ সূত্রে তারা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনের সময় যা ভয়াবহ রুপ নেয়। শুক্রবারের সংঘর্ষ সামাজিক দলাদলি নিয়ে সংঘটিত এরকমই একটি নৃশংসতা ঘটনা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host