অভ্যন্তরীণ সম্পদের ব্যবহার, পাবলিক খাতের উন্নয়ন এবং নারী উদ্যোক্তাদের কর্মক্ষমতা ও আওতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।মূলত করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে এডিবির চালু করা ‘সাস্টেইনেবল ইকোনোমিক রিকভারি প্রোগ্রাম’র আওতায় বাংলাদেশকে এ ঋণ দিচ্ছে এডিবি।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক সংস্থাটি। বিজ্ঞপ্তিতে এডিবির দক্ষিণ এশিয়ার প্রিন্সিপাল পাবলিক ম্যানেজমেন্টের অর্থনীতিবিদ আমিনুর রহমান বলেন, ‘এই প্রোগ্রামটি বাংলাদেশকে রাজস্ব বাড়াতে, সরকারি ব্যয় ও পাবলিক প্রকিউরমেন্টে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সংস্কারে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ব্যবসা ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যাংকিং খাত থেকে স্বল্প সুদে সাশ্রয়ীভাবে ঋণ পেতে সাহায্য করবে।’
এছাড়া এই সাব প্রোগ্রামটি জেন্ডার, জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাইজেশনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়, যা দেশের দ্ররিদ্র জনপদের আয় বাড়াতে সরকারের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করতে সহায়তা করবে বলেও মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।
নতুন এ প্যাকেজটি বাংলাদেশ ব্যাংকের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে চালু করা ডিজিটাল চ্যানেল এবং ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে স্বল্পসুদের ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার উদ্ভাবনী অর্থায়ন পরিষেবায় সহায়তা করবে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
এডিবি আরও জানিয়েছে, এটি প্রান্তিক ও ভূমিহীন কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া ভূমি ও স্থাবর সম্পত্তিহীন যেসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নারী উদ্যোক্তারা রয়েছেন তারাও তাদের লেনদেনের রশিদ ও অস্থাবর অন্যান্য সম্পত্তি যেমন ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ ও মেশিনারিজের জন্য জামানতের ভিত্তিতে ঋণ নিতে পারবেন।
এ প্রোগ্রামের আওতায় নতুন আয়কর আইনের মাধ্যমে আয়কর সংগ্রহ বাড়বে বলেও জানিয়েছে এডিবি। সংস্থাটির মতে, প্রোগ্রামটি একই সঙ্গে কর আদায়ে বিদ্যমান ফাঁকফোকর কমিয়ে আনবে, কর আইন বাস্তবায়নের ব্যবস্থা আরও জোরালো হবে। এছাড়া ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট এবং ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে পাবলিক খাতের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়ানো হবে। পাশাপাশি নতুন চালু হওয়া ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার করে বিভিন্ন পাবলিক প্রকল্পের অনুমোদন ও মূল্যায়ণ করা সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছে এডিবি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এডিবির সঙ্গে বাংলাদেশের সর্ম্পক প্রতিষ্ঠা হয়। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক, কাঠামোগত ও সামাজিক উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এডিবির বিশেষ সহযোগিতা রয়েছে।