সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

শৈলকুপায় ছড়িয়ে পড়ছে গবাদি প্রাণীর নতুন রোগ ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’

রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
Update : সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৩:০১ অপরাহ্ন

রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গরুর প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ (খঝউ) বা লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড’ এবার ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। উপজেলায় এ রোগ ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে মারা গেছে অনেক গরু। এতে খামারি ও কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
জানা গেছে, উপজেলার দোহারো গ্রামের শাহানারা খাতুন নামে এক নারী এনজিও থেকে টাকা নিয়ে গরু কিনেছিলেন। ঋণের কিস্তি পরিশোধের আগেই সংক্রমণে তার সেই গরুটি মারা গেছে। এ কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
কেবল শাহানারা খাতুন নয়, তার মতো এ গ্রামের অনেকেই অভাবের সংসারে সচ্ছলতা আনার আশায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কিনেছিলেন গরু। কিন্তু হঠাৎই দেখা দেয় গরুর ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ এর মতো মরণঘাতী সংক্রামক রোগ। চিকিৎসা করালেও শেষ পর্যন্ত মারা যাচ্ছে একের পর এক গরু।


গরুর এই সংক্রামক রোগে আতঙ্কিত শৈলকুপা উপজেলার খামারি ও কৃষকরা। তারা বলছেন, প্রথমে গরুর গা গরম হয়ে যায়। তারপর শরীরজুড়ে ছোট ছোট মাংসপিণ্ডের মতো ফুলে ওঠে। অনেকটা পক্সের মতো। কিছুদিন পর সেগুলো ফেটে রক্ত বের হয়। এ সময় গরু খাবার না খাওয়ায় রোগা হতে শুরু করে। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিলেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
খামারি ও কৃষকরা জানান, গরুর শরীরে ফুলে উঠে সেখান থেকে চাকা চাকা ঘা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে। এ সময় আক্রান্ত গরু খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। অনেক গরু মারাও যাচ্ছে। মশা-মাছি ও খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ভাইরাসজনিত এ রোগ ছড়ায়। তাই আক্রান্ত পশুকে আলাদা স্থানে রেখে চিকিৎসা দেবার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ অফিসের।
জানা যায়, মশা-মাছির মাধ্যমে রোগটি দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। ১৯২৯ সালে আফ্রিকার জাম্বিয়াতে প্রথম এই রোগ দেখা যায়। ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৪৫ সালে ওই মহাদেশে রোগ মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সেখানে অনেক পশু মারা যায়। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে এই রোগ প্রথম দেখা যায়। রোগটি বর্ষা এবং শরৎকালে বেশি দেখা যায়। আক্রান্ত পশু জ্বরে আক্রান্ত হয়, খাবার খেতে চায়না, আস্তে আস্তে গরুর শরীরে ব্যথা হয়ে ফোসকা ওঠে। পরবর্তীতে ওই জায়গায় ঘাঁয়ের সৃষ্টি করে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মামুন খান বলেন, প্রতিদিন প্রচুর রোগীর চাপ। আমরা নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। া বিচলিত হবেন না, সঠিক চিকিৎসা নিলে রোগ ভালো হবে ইনশাআল্লাহ। যদি কোনো খামারে অসুস্থ প্রাণী থাকে তাহলে সেটিকে আলাদা রাখতে হবে। মশারি টানিয়ে রাখতে হবে যাতে মশা বা মাছি তার শরীরে বসে অপর সুস্থ গরুর মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে। কেননা, মশা বা মাছি অসুস্থ গরুটিকে কামড় দিয়ে আবার যদি সুস্থ কোনো গরুকে কামড় দেয় তাহলেও সেটিও অসুস্থ হয়ে পড়বে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host