নম্বর দেখে খুঁজে বের করতে হচ্ছে প্রিয় স্বজনকে। সারি সারি মরদেহ থেকে নিজের আপনজনকে বেছে নিতে হচ্ছে হতভাগা স্বজনদের। বুকফাটা আর্তনাদে আকাশ ভারী ঝালকাঠির। লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন বাবা, কেউ সন্তান, কেউ বা পরিবারের সবাইকেই।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টা। ঝালকাঠি মিনিপার্কে রাখা সারি সারি মরদেহ। সুমি বেগম খুঁজছেন ভাই, ভাইয়ের বউ ও ভাইয়ের মেয়েকে।
সুমি বেগমের মতো অনেকেই খুঁজে বেড়াচ্ছেন না পাওয়া স্বজনদের। চিৎকারে আকাশ ভারী হয়ে উঠেছে ঝালকাঠির। লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে সন্তান, বাবা, মা হারিয়ে এখন তারা পাগল প্রায়।
এর আগে দুর্ঘটনাস্থল দিয়াকুল নদী তীরে আকন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার আশ্রিতদের আহাজারি। আসলিমা বেগমের মতো অনেকেই গত মধ্যরাতে এ বাড়িতে আশ্রয় নেন। চিৎকার করতে করতে তিনি বলেন, পরিবারের সবাইরে হারাইছি।
আগুনে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দুর্ঘটনার শিকার লঞ্চটি বরগুনায় আসছিল। নিহত ও আহতদের অধিকাংশ এ জেলার বাসিন্দা।
তিনি বলেন, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আর আহতদেরকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা আমরা জেলা প্রশাসন থেকে দেব।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতের অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। লঞ্চে প্রায় ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশ যাত্রী ছিল। বহু হতাহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দগ্ধও হয়েছেন অনেকে। নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে কোস্টগার্ডের সদস্যরা।