চিরবিদায় নিলেন ভারতের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। গতকাল সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। (ইন্নাল্লিাহি…রাজিউন)। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতে নেমে আসে শোকের ছায়া। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিলীপ কুমারের বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় গত বুধবার এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। একই সমস্যা নিয়ে গত ৬ই জুনও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল বর্ষীয়ান এই অভিনেতাকে। যদিও ১১ই জুন তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকরা। এর আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গত কয়েক বছরে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। বর্ষীয়ান অভিনেতার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের বাইরে বাংলাদেশেও রয়েছে দিলীপ কুমারের ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা। দেশের চলচ্চিত্র তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এদিকে দিলীপ কুমারকে মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজের কবরস্থানে গতকালই সমাহিত করা হয়। ১৯২২ সালে পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন দিলীপ কুমার। তার আসল নাম মহম্মদ ইউসুফ খান। ১৯৪৪ সালে সিনেমায় আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। সেই অর্থে ‘জুগনু’ তার প্রথম বক্স অফিস হিট সিনেমা। এছাড়া ‘নয়া দৌড়’, ‘মুঘল-এ-আজম’, ‘দেবদাস’, ‘রাম অউর শ্যাম’, ‘আন্দাজ’, ‘মধুমতী’ এবং ‘গঙ্গা-যমুনা’র মতো ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। ১৯৯৮ সালে শেষবার সিনেমায় অভিনয় করেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৬৬ সালে অভিনেত্রী সায়রা বানুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন দিলীপ কুমার। ‘গোপী’, ‘সাগিনা’ ছবিতে জুটি হয়ে কাজ করেছেন তারা। সেরা অভিনেতা হিসেবে ৮ বার ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন দিলীপ কুমার। সবচেয়ে বেশি পুরস্কার জেতার গিনিস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডও রয়েছে তার। ভারত সরকারের তরফে ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ সম্মান দেয়া হয় দিলীপ কুমারকে। ভারতীয় সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে ‘দাদা সাহেব ফালকে’ পুরস্কার পান তিনি। ২০১৫ সালে ভারত সরকারের তরফে ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানও দেয়া হয় তাকে। ২০০০ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন তিনি। এমনকি ১৯৯৮ সালে দিলীপ কুমারকে নিশান-ই-ইমতিয়াজ সম্মানে সম্মানিত করে পাকিস্তান সরকার।