২১ জুন, বিশ্ব সংগীত দিবস আজ। এই দিনকে ঘিরে নানা দেশে নানা ধরনের আয়োজন হয়েছে। বাংলাদেশেও সংক্ষিপ্ত পরিসরে উদ্যাপিত হয় দিনটি। আজ আমরা জানব এই দিবস সম্পর্কে কিছু কথা।
শিশু জন্মের পর কথা বলতে শেখার আগেই গুনগুনিয়ে সুর তুলতে শুরু করে। আর কিছু না হোক, সুরেই বশ মেনে যায় সমস্ত প্রাণী। হিংস্র বাঘও মন দিয়ে শোনে অচেনা কোনো গান। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু-সময়, বয়স আর স্থানভেদে সুর আর গান মিশে আছে সব জায়গায়। ২১ জুন, আজ ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে’ বা ‘বিশ্ব সংগীত দিবস’।
দিবসটির শুরু ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে ‘ফেত দ্য লা মিউজিক’ বা ‘মেক মিউজিক ডে’ নামে একটি দিনের উদ্যাপন শুরু করা হয়। ফ্রান্সের সংস্কৃতি-মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ১৯৮১ সালে এ ব্যাপারে প্রথম চিন্তা শুরু করেন। তবে এ তো গেল ইতিহাসের একটি অংশ। অনেকের মতে, ১৯৭৬ সালে ফ্রান্সে মার্কিন সংগীতশিল্পী জোয়েল কোহেন ‘সামার সোলস্টাইস’ বা গ্রীষ্মকে উদ্যাপন করতে সারা রাত গান চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব করেন।
সেই প্রস্তাবনার পরবর্তী ফলাফল হিসেবেই আসে ২১ জুনের সংগীত দিবস। বর্তমানে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, লুক্সেমবার্গ, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকাসহ প্রায় ১২০টি দেশে এবং ৪৫০টি শহরে এই দিবস উদ্যাপিত হয়। রেস্তোরাঁ, পার্ক, যানবাহন-সংগীত দিবসে সর্বত্র বিনা মূল্যে গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। শান্তি ও ইতিবাচক চিন্তাকে ছড়িয়ে দিতে দিবসটিকে ব্যবহার করা হয়।
সংগীত নিয়ে জ্যাক ল্যাং-এর মতো করে ফ্রান্সে খুব বেশি মানুষ ভাবেননি। তিনি ফ্রান্সের প্রথাগত গানের ধারাকে ভাঙতে মরিস ফ্লু-রেটকে নিয়োগ দেন। ফ্লু-রেট ১৯৮২ সালে বিশাল এক পরিসংখ্যান চালান। এই পরিসংখ্যানে উঠে আসে সংগীত নিয়ে কাজ করা প্রচুর মানুষের কথা। সে সময় ফ্রান্সে প্রতি দুইজন তরুণের মধ্যে একজন কোনো না কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারতেন। সব নিয়ম পাশে রেখে ঘোষণা দেওয়া হয় নতুন এক ধারার।
যেখানে তরুণেরা শুধু চিরাচরিত সংগীত শিখবেন না, শিখবেন রক, জ্যাজ, পপ-সব ধারার সংগীত। আর শেষমেশ জ্যাক ল্যাং, প্রকৌশলী ক্রিস্টিয়ান ডুপাভিলন আর মরিস ফ্লু-রেটের চেষ্টায় এই উদ্যোগ সফলও হয়েছিল। ২১ জুন উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন হওয়ায়, এই দিনটিকেই সংগীত দিবস হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে।