মার্কিন অর্থনীতিকে চরমভাবে আঘাত করার হুমকি দিয়েছিলেন সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এক প্রতিবেদনে ওয়াশিংটন পোস্ট এ তথ্য জানিয়েছে।সম্প্রতি ডিসকোর্ড সার্ভারে ফাঁস হওয়া একটি গোপন নথি ওয়াশিংটন পোস্টের কাছে আসে। এ থেকে সৌদি আরবের এই হুঁশিয়ারি বার্তা সম্পর্কে জানা যায়।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে গত বছর জুন থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে মন্দাভাব শুরু হয়। এই পরিস্থিতিতে তেল বিক্রি থেকে মুনাফা নিশ্চিত রাখতে একই বছরের অক্টোবরে খনি থেকে পেট্রোলিয়ামের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় ছিল জোটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সৌদি।
ফাঁস হওয়া গোপন নথি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, সৌদি আরব এই সিদ্ধান্ত নেয়ার পরপরই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে ফোন করেন বাইডেন এবং তাকে এই চিন্তা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সৌদি সরকার যদি তেলের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করে-সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সৌদিকে ‘পরিণাম’ ভোগ করতে হবে।
এরপরেই পাল্টা হুমকি দেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স। তিনি বলেন, তেলের উত্তোলন হ্রাসের সিদ্ধান্তকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র যদি সৌদির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়-সেক্ষেত্রে দেশটির সঙ্গে যাবতীয় অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে সৌদি এবং তা ওয়াশিংটনের জন্য আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, সৌদি যুবরাজের হুমকি সরাসরি মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল কিনা, তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
মোহাম্মদ বিন সালমানের এমন হুমকির ব্যাপারে ওয়াশিংটন পোস্টকে মার্কিন ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, আমরা সৌদি আরবের এই ধরনের হুমকি সম্পর্কে অবগত নই। সাধারণত, এই ধরনের নথিগুলো প্রায়ই একটি মুহূর্তের তথ্য প্রকাশ করে, কিন্তু সম্পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।
এ ব্যাপারে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত সৌদি দূতাবাসের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত অক্টোবরে সৌদি আরবকে পরিণাম ভোগের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জো বাইডেন। কিন্তু আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সৌদি আরব নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাইডেন প্রশাসন। সম্প্রতি সৌদি আরব সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। মোহাম্মদ বিন সালমান ও অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জেদ্দায় একটি বৈঠকও করেছেন। এরমধ্যেই ওয়াশিংটনের ওই রিপোর্টটি প্রকাশিত হলো।