সনতচকবর্ত্তী ফরিদপুর : কালের পারিবর্তনে বদলেছে অনেককিছুই। মানুষের খাদ্যাভাসে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন বিশেষ করে ফেরি করে বিক্রি করা খাবারে এসেছে অনেক পরিবর্তন। আধুনিক ফাস্টফুডসহ নানা খাবারের তোড়ে অনেকটা হারিয়ে যেতে বসেছে হাওয়াই মিঠাই। তবু মাঝে মধ্যে দেখা মেলে কোনো পার্ক, গনজমায়েত অথবা বিভিন্ন মেলায়।
লম্বা কাঠির মাথায় পলিব্যাগে মোড়ানো গোলাপি, সাদা হাওয়াই মিঠাই। ঘাড়ে করে ঘুরে বেড়ায় ফেরিওয়ালা। কিছু কিছু ব্যবসায়ী আজও এই হাওয়াই মিঠাইকে হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে দেয়নি তারা হাওয়ায় মিঠাই বিক্রি করে সংসার চালান অনেকে।
একাবিংশ শতাব্দির এ যুগেও কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের অমর বানী পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটির মতোই হাওয়াই মিঠাই। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি মিঠাইয়ের নাম এটি। এখনো এটি গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয়। একসময় ‘হাওয়াই মিঠাই’ গ্রামাঞ্চলে বেশি পাওয়া যেতো। কিন্তু, আধুনিকতার কারণে এটি এখন আর খুব বেশি দেখতে পাওয়া যায় না। তবে তা একেবারে বিলীনও হয়ে যায়নি।
হাওয়ার সঙ্গে এই মিঠাই বা মুখে দিলে নিমিষে বিলীন হয়ে যায় বলেই এর নাম ‘হাওয়াই মিঠাই’। বানানোর সঙ্গে সঙ্গে মুখে দিয়ে খেতে হয় এটি। পেট ভরে না এ মিঠাইয়ে, তবে খেতে মিষ্টি। মুখের স্বাদ মেটায় শুধু। দেখতে অনেক বড়সড় মনে হলেও নিমিষেই এটি মুখের ভেতর এসে গলে যায়। বিশেষ করে গ্রামের শিশুরা এই মিঠায়ে বেশি আনন্দ পায়।
হাওয়ায় মিঠাই তৈরির কারিগর মোঃ গফফার (৫৫)শেখ বলেন, সাধারণত বাজার থেকে চিনি কিনে সেখানে কিছু জাফরান মিশিয়ে লাল রংয়ের আর সাদা চিনি দিয়ে তৈরি হয় সাদা মিঠাই। মেশিনের নিচে আগুন দিয়ে তাপ দিয়ে তৈরি করে ওপরে চিনি ঢেলে দেয়া হয়। পরে হাত দিয়ে চাকতি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তৈরি করা হয় এ মিঠাই।এরপর সেগুলো পলিথিনে প্যাকেটজাত করে পাইপের সঙ্গে ঝুলিয়ে হকারদের কাছে বিক্রি করি।
হাওয়াই মিঠাই বিক্রেতা মো: মজিবর (৬৫) শেখ জানান, আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এ হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছি। এতে যা রোজগার হয় তাতে কোন রকমে সংসার চলে যাচ্ছে। এ হাওয়াই মিঠাই এভাবে বিক্রি করে আমার প্রতিদিন প্রায় ২০০/৩০০ শত টাকা লাভ থাকে। এতে যে লাভ হয় তাতে আমার ছয় সদস্যের পরিবারে ভরন পোষন কোন রকমে চলে যায়।