নিউজ ডেস্ক: ‘টাকা না দিলে একেবারে ভাইরাল করে দেব। একদম। পরবর্তীতে এমপি ফাইনাল। আমি তো ভাইরাল করার ওস্তাদ।’ ফোনের অন্য প্রান্তে অচেনা একজনকে এভাবেই বলছিলেন জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হেলেনা জাহাঙ্গীর।
হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব কথোপকথনের তথ্য ধরে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ ও র্যাব।
একটি অডিও ক্লিপে মেহেদী নামে একজনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে কথোপকথন:
হেলেনা: বিএনপি না আওয়ামী লীগ?
অন্য প্রান্ত: আরে বিএনপির, মোংলার রামপাল আছে না? ওখানের এমপি ইলেকশন করেছিল।
হেলেনা: টাকাটুকা দেবে? তাহলে তাকে মালয়েশিয়ার ব্যুরো চিফ বানিয়ে দেব। কাল-পরশু নতুন একটা গেস্ট পাঠাব।
অন্য প্রান্ত: আরে নাহ। এমনি যাবে।
হেলেনা: টাকা না দিলে একেবারে ভাইরাল করে দেব। একদম। পরবর্তীতে এমপি ফাইনাল। আমি তো ভাইরাল করার ওস্তাদ।
অন্য প্রান্ত: প্রাথমিক স্টেজে তো চাওয়া যায় না! আগে ইনভলব করি। এদেরকে তো পরে মুরগি বানাব।
অন্য আরেকটি অডিও ক্লিপে হেলেনা জাহাঙ্গীর ও তার ব্যক্তিগত সহকারীর কথোপকথন:
হেলেনা: মালয়েশিয়ার মেহেদী আছে না? ও বারবার আমাকে ডিস্টার্ব করতেছে। এসএমএসে। বিভিন্ন মানুষকে দিয়ে কল করাচ্ছে। তুমি তাকে বলবা ঠিক আছে, আপনি পাঁচ লাখ টাকা দেন। ম্যাডামকে আমি রাজি করাই। ইউ মেক পলিসি অ্যাপ্লাই। বুঝছ? পলিসি মেক না করলে মেকার হতে পারবে না।
অন্য প্রান্ত: আজকে কি কল করেছিল ম্যাম?
হেলেনা: নানা মানুষকে দিয়ে আমাকে ফোন করাচ্ছে। পুলিশ আছে না একটা?
অন্য প্রান্ত: পারভেজের কথা কি বলে?
হেলেনা: ওর কথা বাদ। তুমি বলো মাসে এক লাখ করে টাকা দেন। পাঁচ থেকে ছয় মাস পর আপনাকে ব্যুরো চিফ বানাইয়া দেব মালয়েশিয়ার। আমাদের তো এখন টাকা দরকার। আমাকে দিয়েন না। অফিসকে দেন।
এদিকে আলোচিত ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার রোববার রাতে বলেন, মামলার তদন্তের দায়িত্ব থানা-পুলিশ থেকে ডিবিকে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদক ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি আদালতের নির্দেশে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে। তাকে ডিবি জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে দীর্ঘ চার ঘন্টা ধরে অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
এরপর তার মালিকানাধীন জয়যাত্রা আইপি টিভির অফিসে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং স্যাটেলাইট টিভির বেশকিছু সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।