কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ জমির অংশ ও টাকা না পেয়ে মাকে ছুরিকাঘাত করে রক্ত ঝরানোর অভিযোগ উঠেছে ক্লোজআপ তারকা সাজু আহমেদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়নের তেলিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহত রানীজান বেওয়াকে (৬৫) কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাজুর বড় বোন আঞ্জুমান আরা বেগম বাদী হয়ে সংগীতশিল্পী সাজুকে আসামি করে উলিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সাজুর এ ধরনের কর্মকান্ডে
জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে সাজুর বাবা সাবেক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আজগার আলী মারা যান। এর পর দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন রানীজান বেওয়া। এর মধ্যে সাজুর বড়ভাই রাজু আহমেদ মেয়ের বিয়ের জন্য একটি জমি বন্ধক রেখে পাঁচ লাখ টাকা নেন। এর পর থেকেই জমির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে পরিবারে দ্বন্দ্ব চলছিল।
চিকিৎসাধীন রানীজান বেওয়া বলেন, ২০০৮ সালে টিভি চ্যানেল এনটিভির গানের রিয়ালিটি শো ক্লোজআপ-ওয়ান প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয় সাজু। ওই সময় ছেলের জন্য জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে ১৬ লাখ টাকা খরচ করা হয়। সেই টাকা তার ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে তা না করে উল্টো আরও টাকা চায়। সম্প্রতি রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার পর সে পান্ডুল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছিল। এ ব্যয় নির্বাহ করতে সে জমি বিক্রির জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছিল। এ নিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। আমাকে অপমান করত। আজ সে আমার গায়ে হাত তুলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
সংগীতশিল্পী ও জেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটির সদস্য সাজু আহমেদ মায়ের ওপর হামলার কথা অস্বীকার করে আমাদের সময়কে বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। আমি ভিতরের রুম থেকে বাইরের রুমে শিফট হতে চেয়েছিলাম। কারণ আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব আসে। সেটা আমি মাকে জানাই। মা পাশের গ্রামে থাকা আমার বড় বোন আঞ্জুমান আরাকে মোবাইলে ডেকে আনেন। বড় বোন আমাকে শিফট হতে বাঁধা দেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমার ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে বড় বোন আমাকে পীড়ি দিয়ে আঘাত করলে আমি ঠেকাতে গিয়ে সেটি মায়ের কপালে আঘাত করে। আমি মাকে আঘাত করিনি।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, রোগীর বাম চোখের উপর কপালে কেটে যাওয়া স্থানে সাতটি সেলাই দিতে হয়েছে। এখন অবস্থা উন্নতির দিকে।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির জানান, সংগীতশিল্পী সাজুর বিরুদ্ধে তার মাকে আঘাত করার অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।