রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ১১:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মামুনুল হক কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ঝিনাইদহে জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাশেদ আল মামুনকে হত্যার হুমকি কর্ণেল ফারুক খানের সাথে আসাফো নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় ঝিনাইদহ-১ শৈলকুপা আসনের উপনির্বাচনে সাইদুর রহমান সজলের মনোনয়ন জমাদান প্রার্থী তলিকায় নাম নেই, তবুও চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা পিরোজপুরে রাসেল হত্যায় আসামীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন পত্নীতলায় মহান মে দিবস পালিত পিরোজপুরে ৩ উপজেলায় ৩২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা মাগুরায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শণী ফরিদপুরের মধুখালীতে প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী – ২০২৪ ও আলোচনা সভা
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

উলিপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে “অ্যাসাইনমেন্ট” জমা নিতে টাকা আদায়ের অভিযোগ

হাফিজ সেলিম,  কুড়িগ্রাম
Update : বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৯:৫৯ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রাম  জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের উলিপুরে ”নারিকেল বাড়ী পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের” প্রধান শিক্ষকসহ কতিপয় সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহনে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা  আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিমকে  অবহিত করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট বিষয়ে টাকা আদায় করা গুরুতর অপরাধ,ঘটনাটি আমার জানাছিল না খোঁজ নিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয়  ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে,উলিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মোঃ তারিকুল ইসলাম গতকাল বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) অভিযোগের প্রেক্ষিতে নারিকেল বাড়ি পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে সরেজমিন তদন্তে যান এবং ঘটনার সত্যতা পান । তদন্তকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষণিক ভাবে কৃতকর্মের কথা স্বীকার করে  তদন্ত কর্মকর্তার সামনেই অভিযোগকারীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার উলিপুর উপজেলার নারিকেলবাড়ি পন্ডিত মহির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার তার কতিপয় সহকারী শিক্ষককে সাথে নিয়ে করোনা কালীন সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর পত্র গ্রহণে ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে  নবম শ্রেনী পর্যন্ত ২০ টাকা এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিকট ৫০ টাকা করে জোড় পূর্বক আদায় করেন।
অভাবী এলাকার অনেক শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের দাবীকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রধান শিক্ষকসহ অভিযুক্ত সহকারি কতিপয় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উত্তর পত্র গ্রহণ না করে উল্টো শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। এমনকি হুমকি দিতেন, এভাবে ” যে যারা টাকা দেবে না তাদের উত্তর পত্র মূল্যায়ন করা হবেনা”।
এ অবস্থায় করোনা কালীন মহা বিপর্যয়ের মাঝে আর্থিক ভাবে বিধ্বস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দরিদ্র অবিভাবকরা ধার-দেনা করে  তাদের দাবীকৃত টাকা দিতে বাধ্য হন বলে জানান ভুক্তভোগী অভিভাবকরা । জোরপূর্বক টাকা আদায়ের ঘটনাটি অভিভাবক মহলে জানাজানি হলে সম্প্রতি নুর আসাদ সহ ১৭ জন অভিভাবক জেলা প্রশাসক কুড়িগ্রাম ও নির্বাহী অফিসার উলিপুর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, বিদ্যালয়টিতে বর্তমান ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে  নবম শ্রেনী পর্যন্ত প্রায় ৪ শত ও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী প্রায় ১০০ জন পরীক্ষার্থীর নিকট থেকে  হিসাব অনুযায়ী ১২ হাজার থেকে ১৩ হাজার টাকা অবৈধ ভাবে আদায় করেন প্রধান শিক্ষক। জোরপূর্বক টাকা আদায়ের ঘটনায় অভিভাবক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে, এমন অনৈতিক কর্মকান্ডের কারনে বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের ভাবমূর্তি যেমন অনেকাংশে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছে  তেমনি বিদ্যালয়টির  সুনামও  ক্ষুন্ন  হয়েছে বলে জেলার একাধিক শিক্ষাবিদ মন্তব্য করেন।
গত ১৮ জুলাই সরকারের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কতৃক জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা যেন কোন অনৈতিক চাপের মুখোমুখি না হয় তা লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ ছাড়া অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোন প্রকার ফি/ মুল্যায়ন ফি/ পরীক্ষা ফি বাবদ অর্থ গ্রহণ করা যাবেনা। এ বিষয়ে কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তা দ্রুততার সাথে তদন্ত পূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
 এমনকি ২০২১ সালে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের জন্য এ বিজ্ঞপ্তির সাথে একটি কাভার পৃষ্ঠা (নমুনা) সংযুক্ত করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাইলে উল্লেখিত কাভার পৃষ্ঠা শিক্ষার্থীদের  অ্যাসাইনমেন্ট প্রদানের সময় সরবরাহ করতে পারবে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা কাভার পৃষ্ঠার সংশ্লিষ্ট অংশ পূরণ করে অ্যাসাইনমেন্টের সাথে যুক্ত করে অবশ্যই জমা দেবে; তবে এ কাভার পৃষ্ঠার জন্য শিক্ষার্থীদের  নিকট থেকে কোন টাকা আদায় করা যাবেনা।
সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সতর্ক করলেও এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  তা একে বাড়েই মানেননি।
 অভিযোগ উঠেছে,  বুধবার তদন্ত কালীন সময়ে এলাকার বিপুল সংখ্যক অভিভাবক তদন্ত কর্মকর্তার সাথে দেখা করতে চাইলে ঐ কর্মকর্তা তাদের অনুমতি   দেননি এবং তাদের কথাও শুনেননি। শুধুমাত্র লিখিত অভিযোগ কারীদের বক্তব্য শোনেন।
অভিযোগকারী অভিভাবকদের অনেকেই  তাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এহছানুল করিমের সাথে সাক্ষাতে কথা হলে তিনি টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, সব ছাত্রের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়নি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, তদন্তে ঘটনা প্রমাণিত হয়েছে, প্রধান শিক্ষক তাৎক্ষণিক দোষ স্বীকার করে অভিযোগ কারীদের নিকট ক্ষমা চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা  হলে তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণের বিষয়টি গুরুতর অপরাধ। বিষয়টি আমি জানিনা খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host