রকিবুল ইসলাম রুবেল, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: রংপুরের বদরগঞ্জে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ৩০ বছর বয়সী নারীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার (২৫ জুলাই) মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এই গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে ওই নারীর প্রেমিক তহিদার রহমান।
ঘটনার রাতে শনিবার (২৪ জুলাই) মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ওই নারীকে ডেকে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে ঘাতক তহিদার রহমান (৩২)।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে বদরগঞ্জ আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তহিদার রহমান । এর আগে সোমবার (২৬ জুলাই) রাতে তাকে উপজেলার গোপীনাথপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর দুজনের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই সন্তানের জননী ওই নারীর সঙ্গে দুই বছর আগে তার স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর নানির বাড়ি এলাকার তহিদার রহমানের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
ওই সম্পর্কের জেরে গত শনিবার রাতে তহিদার রহমান মোবাইলে ফোন করে ওই নারীকে বাড়ি থেকে বাইরে ডেকে নেয়। সেখানে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা তহিদারের অপর দুই বন্ধু জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের বিষয়টি সালিস ডেকে প্রকাশ করার কথা বললে, ওই নারীকে হত্যার পরিকল্পনা করে তারা। বাড়ির পাশে একটি নির্জন বাঁশ ঝাড়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে গলায় রশি বেঁধে বাঁশঝাড়ের ভেতরে একটি সজনে গাছের ডালে ঝুলিয়ে দেয়। কিন্তু গাছের ডাল ভেঙে লাশ মাটিতে পড়ে যায়। ওই অবস্থায় লাশ ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ওই নারীর ভাই বাদী হয়ে বদরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত করতে নেমে এই ঘটনায় তিন জনের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে। ঘটনার মূল হোতা প্রেমিক একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে তহিদার রহমানকে গ্রেপ্তার করে।
বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানান, নিহত নারীর পূর্ব পরিচিত ছিল তহিদার রহমান। তার অপর দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে তহিদার বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তার অপর দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।