পুনীত নিজের ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, রাজ তার অ্যাপ ‘হটশট’-এ অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করেছিলেন তার সঙ্গে। ইনস্টাগ্রামে সরাসরি যোগাযোগ করেছিলেন পুনীতের সঙ্গে।
রাজের গ্রেপ্তারির খবরের স্ক্রিনশট দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমি এবার নির্ঘাত মরব। এই লোকটা আমাকে সরাসরি মেসেজ পাঠিয়েছিল!! হটশটে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়ে। আমি ভাবতেই পারছি না, উনি সত্যিই মেয়েদের এভাবে লোভ দেখাচ্ছিলেন তার ছবিতে অভিনয়ের জন্য! কী সাংঘাতিক। জেলে পচে মরো রাজ কুন্দ্রা।’
রাজের অ্যাপ থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন মডেল ইশিকা বোহরাও। রাজের সহকারী উমেশ কামাত এক বছর আগে যোগাযোগ করেছিলেন তার সঙ্গে। নগ্ন দৃশ্যে শ্যুটিংয়ের জন্য প্রতিদিন ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইশিকাকে।
তাকে বলা হয়েছিল, নগ্ন দৃশ্যের ওই শ্যুটিং হবে ইরোটিক। অর্থাৎ শুধু নগ্নতা নয়, তাতে শিল্পের মিশেল থাকবে। ইশিকা জানিয়েছেন, লকডাউনের জন্য তার হাতে তখন কাজ ছিল না তাই তিনি শ্যুটিংয়ে রাজি হয়ে যান।
তবে ইশিকার দাবি, নিজের অ্যাপে ইরোটিক ছবি রাখলেও বিদেশে পূর্ণমাত্রার পর্নো ছবিই বিক্রি করতেন রাজ। শ্যুটিংয়ে গিয়ে তিনি তা বুঝেছিলেন।
ইশিকার কথায়, তাকে আর্ট শ্যুটের কথা বলা হলেও শ্যুটিংয়ে তার চার দিকে চারটি ক্যামেরা তাক করা ছিল। এর মধ্যে একটি ছিল লো অ্যাঙ্গেলে অর্থাৎ নিচ থেকে উপরের দিকে ছবি তোলার জন্য নেওয়া। ইশিকার দাবি, তিনি বুঝেছিলেন এ ধরনের ছবি কখনওই আর্ট শ্যুটে ব্যবহার হতে পারে না।
রাজের অ্যাপের বিরুদ্ধে মডেলদের কম টাকায় বেশি কাজ করিয়ে নেওয়ার অভিযোগও এনেছেন ইশিকা। তার দাবি, তাকে টানা ২৪ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। যেখানে বলিউড এবং মডেলিং দুনিয়াতে একদিনের কাজের সময় মাত্র আট ঘণ্টার। ইশিকা জানিয়েছেন, তার মতো বহু মডেলকে এভাবে এক বেলার টাকায় তিনবেলার কাজ করিয়ে নিতে দেখেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রাজের অ্যাপে কাজ করেননি তিনি।
মডেল অভিনেত্রী সাগরিকা সোনা সুমনের দাবি, তাকে ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের সুযোগ দেবেন বলেছিলেন রাজ। কিন্তু অডিশনে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয় তার। ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে পুলিশে অভিযোগও জানান তিনি। দাবি, সাগরিকাকে অডিশনে পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়।
সাগরিকার কথায়, ‘মডেলিংয়ের কাজ করলেও লকডাউনে হাতে কাজ ছিল না। এর মধ্যেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন উমেশ।’ রাজের সহকারী উমেশ তাকে ওয়েবসিরিজে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ভিডিও কলে আচমকাই তাকে পোশাক খুলে ফেলতে বলা হয়। উল্টো দিকে ছিলেন রাজ, উমেশ এবং মুখ ঢেকে রাখা এক ব্যক্তি।
শার্লিন চোপড়ার সঙ্গে রীতিমতো চুক্তি করেই কাজে নেমেছিলেন রাজ। মহারাষ্ট্র সাইবার সেলকে শার্লিন জানিয়েছেন, রাজের হাত ধরেই প্রাপ্তবয়স্কদের ছবির জগতে আসেন তিনি।
এক একটি ছবিতে কাজ করার জন্য ৩০ লাখ টাকা করে দেওয়া হত শার্লিনকে। শিল্পার স্বামীর অ্যাপের জন্য এমন ১৫-২০টি ছবিতে কাজ করেছেন তিনি।
রাজ তাকে তার ছবির লভ্যাংশের ৫০ শতাংশ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন শার্লিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখেননি। তাই এক বছর পর চুক্তি ভেঙে যায়।
পুনম পাণ্ডে জানিয়েছেন, রাজের সঙ্গে তার অনেক খারাপ অভিজ্ঞতা হলেও শিল্পা শেঠির কথা ভেবেই তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত বলতে চান না। তবে ‘অল্প কথায়’ পুনম যা বলেছেন, তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
পুনমের দাবি, হটশটের আগেও প্রাপ্তবয়স্কদের অ্যাপ বানানোর চেষ্টা করেছিলেন রাজ। তিনি আর রাজ একসঙ্গেই নাকি ওই অ্যাপ বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়বস্তু থাকবে। কিন্তু টাকার ভাগ বাটোয়ারায় অসঙ্গতি দেখে নাকি চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে যান পুনম।
পুনমের অভিযোগ, তার কিছু ছবি ও ভিডিও রাজের সংস্থার কাছে থেকে গিয়েছিল যা এরপর বিনা অনুমতিতেই প্রকাশ করে দেন রাজের সংস্থা। ২০১৯ সালে এ নিয়ে থানায় মামলাও দায়ের করেছিলেন পুনম। মডেল অভিনেত্রীর দাবি, ওই সব ছবি এবং ভিডিও’র নিচে তার ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হত। যার জন্য নম্বর বদলাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। এমনকি দেশ ছাড়তেও নাকি বাধ্য হন পুনম।
সূত্র: আনন্দবাজার