প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের কথা বলে খুনিদের আশ্রয় দেয়। বারবার অনুরোধ করেও বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফিরিয়ে দেয়নি দেশটি।
ঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট থেকে প্রকাশিত মুজিব স্মারকগ্রন্থ ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ এবং ‘ন্যায় কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করেনি।
বাঙালির স্বাধীনতা প্রাপ্তির জন্য এক জ্যোতির্ময় আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরাধীন জনগোষ্ঠীকে সশস্ত্র সংগ্রামে উজ্জীবিত করতে তার ওপর শুধু শারীরিক নির্যাতনই নয়, সে সময় নিপীড়নের খড়গ চালানো হয়েছিল বিচারালয়ের মাধ্যমে।
কেমন ছিল সেসব দিন, কেমন ছিল আদালতের বারান্দায় কিংবা বিচারস্থলে জাতির পিতার বিভিন্ন মামলার সময়গুলো। নতুন প্রজন্মের কাছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির সংগ্রামমুখর জীবনের অনাবিল দীক্ষা ছড়িয়ে দিতে এবার প্রকাশিত হলো দুর্লভ এক গ্রন্থ।
মুজিবশতবর্ষে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট থেকে প্রকাশিত হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ নামে মুজিব স্মারকগ্রন্থ এবং ‘ন্যায় কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষ স্মরণিকা। ভার্চুয়াল মাধ্যমে গণভবন থেকে এসবের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতার সংগ্রামের বিভিন্ন অধ্যায় তুলে ধরে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানে ন্যায় বিচারের কথা বলে হলেও তা ভুলুণ্ঠিত হয় জিয়াউর রহমানের সময়ে।
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার কোথায় ছিল, মানুষের অধিকার কোথায় ছিল। আমি যদি বেঁচে না থাকতাম বা যদি ক্ষমতায় না আসতাম তাহলে কোনোদিন আর এ বিচার হতো না। কেউ ছিল সাহস করে এ কাজ করার।
ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার হলেও পলাতক খুনিদের সাজা কার্যকর নিয়ে হতাশা কাটেনি। সরকার প্রধান প্রশ্ন তোলেন, যেসব দেশ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা বলে, তারাই কী করে খুনিদের আশ্রয় দিচ্ছে?
শেখ হাসিনা বলেন, নূরকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে কানাডা আর খুনি রাশেদ এখনও যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে বড় কথা যারা সব সময় ন্যায়ের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটার অধিকার এর কথা বলে। তারপর যখন বিচার হলো তখন এই খুনিদের আশ্রয় দিয়ে বসে থাকল।
তিনি আরও বলেন, আমি সরকারে আসার পরে বার বার যেসব রাষ্ট্রপতি এসেছে প্রত্যেকের কাছে বার বার অনুরোধ করেছি যে একটা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আপনারা কিভাবে আশ্রয় দেন। তাদের কাছ থেকে আমাদের আইনের ছবক শুনতে হয়, গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়, ন্যায় বিচারের কথা শুনতে হয় এটা আমার কাছে খুব অবাক লাগে।
আদালতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায় লেখার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আলাদা উইং কিংবা বিভাগ খোলারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।