শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

মুরাদকে কিছুদিন অস্বাভাবিক দেখা যাচ্ছিল: তথ্যমন্ত্রী

Reporter Name
Update : মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:৪৪ অপরাহ্ন

নিউজ ডেস্ক:  ফেসবুক লাইভে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং অডিও ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সুস্থতা কামনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিগত কয়েকমাস তাকে ভিন্ন মনে হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর তিনটার দিকে আলোচনা-সমালোচনায় থাকা তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিষয়ে কথা বলতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে তথ্যমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের সুস্থতা কামনা করে বলেন, ‘তিনি (মুরাদ হাসান) আমাকে মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে সহযোগীতা করেছেন। সেজন্য আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তার সুস্থতা কামনা করি। আমি তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কমনা করি।’

এ সময় ‘মুরাদ হাসান অসুস্থ কি না’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্য মন্ত্রী হাসি দিয়ে বলেন, ‘যে কোনো মানুষেরই তো সুস্থতা কামনা করা যায়, আপনারও (সাংবাদিকদের) সুস্থতা আমি কামনা করতে পারি যাতে আপনি অসুস্থ না হন।’

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলনে মুরাদ হাসানের পরিবর্তনের প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আগে যেমন ছিলেন, এখন তার কর্মকাণ্ডে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। বিগত কয়েকমাস তাকে ভিন্ন মনে হয়েছে।’ তবে বিষয়টির বিস্তারিত জানতে সাংবাদিকরা একাধিকবার প্রশ্ন করলেও তিনি খোলামেলা কথা বলতে রাজি হননি।

মুরাদ হাসান সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘মুরাদ হাসান সবসময় আমাকে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাকে আমি ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু তার কিছু বক্তব্য সরকার এবং দলকে বিব্রত করেছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। সে মোতাবেক তিনি পদত্যাগপত্র নিজে স্বাক্ষর করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।’

ডা. মুরাদ হাসানের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তথ্য মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (মুরাদ হাসান) কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, যেগুলো দলের সাথে বা সরকারের সাথে আলোচনা না করেই দিয়েছেন। যা সবার জন্যই বিব্রতকর। তাই প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বলেছেন। কারণ, দল বা সরকার বিব্রত হয়- এমন কথা প্রধানমন্ত্রী কখনোই সহ্য করেন না।’

এর আগে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ১২টার দিকে ইমেইলে নিজ দপ্তরে পদত্যাগপত্রটি পাঠান প্রতিমন্ত্রী। এখন তার পদত্যাগ পত্রটি কার্যকর হওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, পদত্যাগপত্রে মুরাদ হাসান তার মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পাওয়ার যে তারিখ উল্লেখ করেছেন সেখানেও ভুল করেছেন। তিনি ২০১৯ সালের ১৯ মে তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছে। কিন্তু পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন ১৯ মে ২০২১!

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে মুরাদ হাসান লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্ব-শ্রদ্ধেয় সালাম নেবেন।  মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গত ১৯ মে ২০২১ তারিখের স্মারকমূলে আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।  আমি আজ ৭ ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক।’

‘এমতাবস্থায়, আপনার নিকট বিনিত নিবেদন, আমাকে অদ্য ৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার লক্ষ্যে পদত্যাগপত্র গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’

এর আগে সকালে, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের ইঙ্গিত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। আগামী কার্যনির্বাহী সভায় তার বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

হানিফ বলেন, ‘মুরাদ হাসানকে এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে দলের আগামী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’

গত কয়েকদিন ধরেই বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আলোচনায় ছিলেন এ প্রতিমন্ত্রী। বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মুরাদ হাসান।

সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।


এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

এরই মধ্যে রোববার মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি।

ভাইরাল হওয়া সেই অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেন চিত্রনায়ক ইমন। ইমন বলেন, ‘যা শুনেছেন তাই। এটি আসলে বছরখানেক আগের ঘটনা। একটি সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানের আগের রাতে প্রতিমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। বাকিটা তো আপনারা শুনেছেনই।’

মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host