সনতচক্রবর্ত্তী:মাঘী পূর্ণিমায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কয়ড়া কালী বাড়ি মন্দিরে গঙ্গা স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কয়ড়া কালি বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদে ঐতিহ্যবাহী গঙ্গা স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকেই কুমার নদের এ স্নান ঘাট ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। কেউ এসে পূজার আনুষ্ঠানিকতা সেরে স্নান করছেন, কেউবা স্নান করে পূজার আনুষ্ঠানিকতা করছেন। বেল পাতা বিভিন্ন রকমের ফল ফুল অর্ঘ সামনে করে নদীর ধারে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন পুরোহিতরা। পূণ্যার্থীরা দুহাত তুলে পুরোহিতের সামনে বসে প্রার্থনা শেষে নদীর জলে স্নান করছেন। পুরোহিতদের যে যার ইচ্ছামতো দক্ষিণা দেন। কেউ আসছেন কেউ বা যাচ্ছেন। স্নান শেষে পোশাক পাল্টে স্নান ঘাটে শুকিয়ে নিচ্ছেন। এ উপলক্ষে বসেছিল মেলাও। এলাকার মানুষ যেন এ দিনটির অপেক্ষায় থাকে। হিন্দু মুসলামান উভয় ধর্মের মানুষ এ মেলায় আসেন যা সম্প্রীতির চিহ্ন বহন করে। মাটির তৈরি খেলনা এ মেলার বিশেষ আকর্ষণ হলো বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি , বিভিন্ন ধরণের খেলনা, দা বটি, হস্তশিল্পজাত দ্রব্যাদী পাওয়া যায় এ মেলায়।
কালী বাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি সুবাস সাহা জানান “শত শত বছর যাবত কয়ড়া গঙ্গা স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দূর দূরান্ত থেকে পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা এখানে এসে গঙ্গা স্নান করে যান।” মাগুরা জেলার থেকে আসা এক সাধু ভক্ত জানান, মূলত পাপ মোচনের উদ্দেশ্যে গঙ্গা স্নান করে থাকেন এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা। শিশু কিশোর যুবক যুবতী বৃদ্ধ বৃদ্ধাসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এসে একসাথে গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে নিজেদের ধুয়ে মুছে ফেলেন। গঙ্গাস্নান করতে আসা সরলা রায় নামে এক ভক্ত বলেল, কালী পূজার আনুষ্ঠানিকতার পর এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ গঙ্গা স্নান করে থাকেন। তিনি আরও জানান, প্রতিবছর গঙ্গাস্নান এখানে হয়ে থাকে। আমরা বিশ্বাস করি এসময়ে এখানে স্নানের ফলে আমাদের পাপগুলো মোচন হবে। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গঙ্গা স্নান করতে এসেছি।