খুলনা ব্যুরোঃ স্বাধীনতার স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আতাউর রহমান প্রধান বলেন, ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে ব্যাংককে ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনাসহ ২০২১ সালে ব্যাংকের অর্জিত অগ্রগতি আরো সুসংহত ও বৃদ্ধি করা হবে।
সোনালী ব্যাংকের এমডি আরও বলেন; বর্তমানে মুনাফার পাশাপাশি আমানতের দিক দিয়ে সোনালী ব্যাংক শীর্ষে। করোনা কালীন সময়েও আমাদের ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে শিল্পখাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। গ্রাহক সেবার মান আরও বৃদ্ধির জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু করা হবে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্টিকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং এর কার্যক্রম শীঘ্রই শুরু করার বিষয়েও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি শনিবার সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার’স অফিস খুলনা কর্তৃক আয়োজিত বিভাগীয় সম্মেলন-২০২১ উপলক্ষ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়্যাল বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই সময়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা পাঁচ বছর এগিয়েছি। করোনা মহামারী আমাদের পাঁচ বছরের প্ল্যানকে এক বছরে বাস্তবায়ন করতে শিখিয়েছে। করোনার সময় বিকল্প পন্থায় তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে ঘরে বসে হিসাব খোলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রধান্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনার প্যাকেজ বাস্তবায়নে সোনালী ব্যাংক কাজ করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রণোদনা ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ বিমানকে এক হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছি।
তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরনীয় করে রাখতে সোনালী ব্যাংকের ২০২০ সালের শ্লোগান ছিল ‘দৃপ্ত শপথ মুজিব বর্ষে, আমরা যাবো সবার শীর্ষে’। করোনায় দেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির মধ্যেও ‘ব্যাংক মাতা’ হিসেবে পরিচিত সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে ২০২০ সালে ব্যাংকিং খাতের সর্বোচ্চ মুনাফা ২১৭৫ কোটি টাকা অর্জন করেছে। ২০২০ সালে ব্যাংকিং খাতের সর্বোচ্চ এ মুনাফা অর্জিত হয়েছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের মাননীয় চেয়্যারম্যান জনাব জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী এর নেতৃত্বে পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা ও দিকনির্দেশনা যথাযথ প্রতিপালনের মাধ্যমে।
খুলনা বিভাগীয় সম্মেলন-২০২১ এ উপস্থিত অত্র অঞ্চলের ১২৩ টি শাখার মধ্যে ১৩ টি শাখাকে ঈখ মুক্ত করায় শাখা ব্যবস্থাপকগণকে তিনি ধন্যবাদ জানান। শাখা প্রধানদের আরো নিরলসভাবে কাজ করে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি তার বক্তৃতায় আরো উল্লেখ করেন যে, খুলনা অঞ্চলে পাট ও হিমায়িত চিংড়ি খাতের ঋণসূহকে নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ অব্যাহত আছে।
উপস্থিত সকল শাখা ব্যবস্থাপকগণ ২০২১ সালে প্রদত্ত সকল সূচকের টার্গেট অর্জন করবেন মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ২০২১ সালের প্রফিট টার্গেট ৩,৫০০ কোটি টাকা অর্জনের লক্ষ্যে সর্বাত্মকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়, আমানত সংগ্রহ, অউ জধঃরড় বৃদ্ধি, ঋড়ৎবরমহ জবসসরঃঃধহপব সংগ্রহসহ সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ এর আওতায় ঈগঝগঊ ঋণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মঞ্জুরী এবং বিতরণ করতে হবে। বিশেষভাবে উত্তম গ্রাহক সেবা প্রদান করার বিষয়ে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।
জেনারেল ম্যানেজার’স অফিস, খুলনার জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) জনাব মোঃ রেজাউল করিম এর সভাপতিত্বে অদ্য ২৩ জানুয়ারী শনিবার খালিশপুর প্লাটিনাম জুবলী জুট মিলে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় বার্ষিক সম্মেলন-২০২১ উপলক্ষ্যে সকল নির্বাহী/শাখা ব্যবস্থাপকগণকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বই উপহার দেয়া হয়, যা কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, ব্যবসা বৃদ্ধি তথা নিরাপদ ব্যাংকিং পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব মোঃ আব্দুল মান্নান, ব্যাংকের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার জনাব সুভাষ চন্দ্র দাস, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জনাব মোঃ আরশাদ হোসেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংক খুলনা অঞ্চলের আওতাধীন সকল প্রিন্সিপাল অফিস, রিজিওনাল অফিস ও কর্পোরেট শাখার নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় সম্মেলন-২০২১ শেষে মনোজ্ঞ সাং¯ৃ‹তিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত সাং¯ৃ‹তিক অনুষ্ঠানে ব্যাংকের কর্মকর্তা/কর্মচারী ও তাদের ছেলে-মেয়েরা সংগীত পরিবেশন করেন। ব্যাংকের অভাবনীয় সাফল্যকে উদযাপন এবং প্রদত্ত বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা-২০২১ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার হিসেবে জেনারেল ম্যানেজার’স অফিস, খুলনা কর্তৃক একটি থিম সং পরিবেশন করা হয়।