তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সদ্য পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানের অশালীন বক্তব্যসংবলিত ৯৪টি ভিডিও লিংক সরিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। ২৬৮টি লিংকের মধ্যে ১৭৪টি এখনও সরানো বাকি আছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ।
এদিন রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদারের সঙ্গে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) এক মতবিনিময়ে নাসিম পারভেজ এ তথ্য জানান।
নারীদের নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরাতে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিটিআরসির ডিজিটাল নিরাপত্তা দলের সদস্যরা লিংকগুলো শনাক্ত করেন।
এদিকে বিটিআরসির পাঠানো মুরাদের ১২০টি ইউটিউব কনটেন্টের মধ্যে দুটি সরানো হয়েছে। এ বিষয়ে মো. নাসিম পারভেজ বলেন, ইউটিউবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু ইউটিউব তাদের নীতিমালায় খুবই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সেখানে কনটেন্ট রিপোর্টিংয়ের ব্যবস্থা আছে। রিপোর্ট করার পর তাদের দল কাজ করে। বিটিআরসির সঙ্গে ‘টিম বিল্ডিং’ আরও ভালো করতে ইউটিউব এখনও রাজি হচ্ছে না। তবে বিটিআরসি চেষ্টা চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন ডা. মুরাদ।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকেই মুরাদ হাসানের পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
এরই মধ্যে রোববার (৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি।
ভাইরাল হওয়া সেই অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেন চিত্রনায়ক ইমন। ইমন বলেন, ‘যা শুনেছেন তাই। এটি আসলে বছরখানেক আগের ঘটনা। একটি সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানের আগের রাতে প্রতিমন্ত্রী আমাকে ফোন করেছিলেন। বাকিটা তো আপনারা শুনেছেনই।’
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।