শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৫:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মামুনুল হক কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ঝিনাইদহে জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ রাশেদ আল মামুনকে হত্যার হুমকি কর্ণেল ফারুক খানের সাথে আসাফো নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় ঝিনাইদহ-১ শৈলকুপা আসনের উপনির্বাচনে সাইদুর রহমান সজলের মনোনয়ন জমাদান প্রার্থী তলিকায় নাম নেই, তবুও চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা পিরোজপুরে রাসেল হত্যায় আসামীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন পত্নীতলায় মহান মে দিবস পালিত পিরোজপুরে ৩ উপজেলায় ৩২ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা মাগুরায় প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শণী ফরিদপুরের মধুখালীতে প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনী – ২০২৪ ও আলোচনা সভা
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

ফেনীতে অক্সিজেন সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়েছে তিনগুণ

Reporter Name
Update : বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১, ৫:৪৪ অপরাহ্ন

ফেনী সংবাদদাতা: ফেনীর করোনা পরিস্থিতির ক্রমেই ‘অবনতি’ হচ্ছে। হাসপাতাল গুলোতে দ্রুত বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যাদের বেশির ভাগেরই প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন সেবা। অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর মানুষ অতি উচ্চ মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনলেও রিফিল হয়েছে কম। কিন্তু চলতি বছর রিফিল বোতলের চাহিদা গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেড়েছে।

চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে মোট ১ হাজার ২৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৫২ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এই সময়ে নমুনা অনুপাতে শনাক্তের হার প্রায় ৪৫ শতাংশ। গত ৭ দিনে করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গে মারা গেছে তার দ্বিগুন।

মৃত্যু সংখ্যাও তুলনামূলক হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস সালেহীন।

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার জেলায় ২১৯টি নুমনা পরীক্ষা করে ১২৬ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে, যা এ যাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত জুন মাসে ফেনীর ৩ হাজার ৪৯৯টি নমুনা পরীক্ষায় মোট ৭৩৫ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল প্রায় ২১ শতাংশ। শনাক্তের হার বাড়ার পাশাপাশি ফেনীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে কয়েকগুণ বেড়েছে রোগীর চাপ। চিকিৎসাধীন রোগীদের বেশিরভাগেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।

ফেনীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববাবধায়ক ডা. আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৩০ শয্যার বিপরীতে বুধবার পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ১১১ জন রোগী। যাদের মধ্যে ৩৮ জন করোনা পজিটিভ। এদের মধ্যে ৮২ জনকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে। আইসিইউতে রয়েছেন ১০ জন রোগী।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, হাসপাতালে ৪শ’ বেডসাইড ও ১শ’ মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। রোগীর চাপ বাড়ার কারণে চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। চাপ আরও বাড়লে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে। তবে হাসপাতালের লিক্যুইড অক্সিজেন প্ল্যান্ট চালু হলে এ সংকট থাকবে না বলেও তিনি জানান।

ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন রানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ছাগলনাইয়ার ২৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তের হার ৮৪ শতাংশ। হাসপাতালে ১০ বেডের কোভিড আইসোলেশান ওয়ার্ডের বিপরীতে ২৮ জন রোগীকে সেবা দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে ১০ জন পজিটিভ রোগী, যাদের প্রত্যেকের অক্সিজেন লাগছে।

দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ জুলফিকার হাসান জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বর্তমানে ১৬ জন রোগী ভর্তি আছেন। কারো শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা ৮৩ শতাংশ, কারো ৮৮ আবার কারো ৯০ শতাংশ। তাদের প্রত্যেকের অক্সিজেন লাগছে। হাসপাতালের যে সক্ষমতা তাতে একদিন পর পরই কুমিল্লা-চট্টগ্রাম পাঠিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে এনেও কুলানো যাচ্ছে না।

এদিকে ফেনী শহরে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অক্সিজেন এর পরিবেশক হিসেবে কাজ করছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ী রানা ট্রেডার্সের পাশাপাশি তুহিন এন্টারপ্রাইজ ও পপুলার ইঞ্জিনিয়ারিং রয়েছে। তাদের তথ্যমতে, ফেনীতে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিদিন আড়াইশো বেডসাইড অক্সিজেন সিলিন্ডার চাহিদা রয়েছে।

অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবসায়ী রানা ট্রেডার্সের মালিক রানা জানান, গত বছর করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে মানুষ অতি উচ্চ মূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনলেও রিফিল হয়েছে কম। কিন্তু চলতি বছর রিফিল বোতলের চাহিদা গত বছরের চেয়ে তিনগুণ বেড়েছে। এভাবে চাহিদা বাড়তে থাকলে অক্সিজেন সংকট দেখা দিতে পারে।

রানা আরও জানান, অক্সিজেন রিফিল করতে সিলিন্ডার ঢাকায় পাঠানো হলেও সময় মত পাওয়া যাচ্ছে না। সারাদেশ হতে সেখানে অক্সিজেন রিফিল করতে সিলিন্ডার যাচ্ছে। ফলে রিফিল করতেও সময় লাগছে। এতে ২শ’ খালি সিলিন্ডার পাঠালেও বিভিন্ন হাসপাতালের চাহিদা মেটাতে বারবার পরিবহন ব্যয় মেটাতে হচ্ছে। যে কারণে লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. রফিক উস সালেহীন জানান, বুধবার রাত পর্যন্ত ফেনীতে ৫ হাজার ৯ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় কর্মরত সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেনসহ এ পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে জেলায় সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৯ জন। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহার ১.৬১ শতাংশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host