পাবনায় ইউনিয়িন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রতিপক্ষের গুলিতে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হেমায়েতপুর ইউনিয়নের নাজিরপুর হাটপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শামীম হোসেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও নাজিরপুর হাটপাড়া গ্রামের নূর আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় ওই গ্রামে একটি দোকানের পাশে বসে সদ্য পরাজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শামীম হোসেন প্রামানিক বসে কথা বলছিলেন। এসময় অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান অটোরিক্সা প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলুর লোকজনের মধ্যে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের সমর্থকরা নিলুকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এসে অতর্কিতভাবে গুলি চালালে শামীম নামে একজন গুলিবিদ্ধ হন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আনোয়ারুল আজীম চিনু বলেন, আমরা সবাই নৌকার নির্বাচন করি। আমরা পরাজিত হওয়ায় সন্ধ্যায় মূল্যায়ন বৈঠক ছিল। এসময় নীলুর ছেলেরা কয়েকজন এসে অতর্কিত আমাদের উপর হামলা চালায়। এসময় গুলি চালালে শামিম গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিক আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করি।
এ ঘটনার পর পরই হাসপাতালে ছুটে যান পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স।
এসময় তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হলেও সরকার জিতেছে। বিজয়ের মাসে প্রকাশ্যে ত্যাগী আওয়ামী লীগ কর্মীকে এভাবে হত্যা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করবো যারাই এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হোক।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমাদের লোকজন এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ ডিসেম্বর হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচিত হন ও নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলু পরাজিত হন।