সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা সিদ্দিকিয়া কওমি মাদ্রাসার এক ছাত্রকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক পায়ুপথে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মুছআব বিল্লাহ (২৫)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার দুসরাইল গ্রামের মাওলানা সামছুল হকের ছেলে। মঙ্গলবার মাগুরা জেলা সদরের বন্যতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ওই ছাত্রের মা হোসনে আরা বাদী হয়ে গত ৯ জুলাই পাটকেলঘাটা থানায় মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ মুছআব বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান ও বাদিনী হোসনে আরার ছেলে (১২) পাটকেলঘাটা সিদ্দিকিয়া কওমি মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগে (হাফেজী) পড়ালেখা করতো। গত ২৭ এপ্রিল ও ২৬ মে পৃথক পৃথক দু’দিন তাদের ছেলেকে ডেকে নিয়ে শিক্ষক হাফেজ মুছআব বিল্লাহ মাদ্রাসার সিঁড়ির ঘরের পাশের ক্লাস রুমে ও ছাদে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন করে। বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ও দেখান তিনি। এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে পাটকেলঘাটা বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক এমএ মামুনকে দেখান। পরবর্তীতে সে আবারও অসুস্থবোধ করলে গত ৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে মোবাইলে তার বাবাকে ঘটনার বিষয়ে জানান। এরপর ৯ জুলাই তার মা বাদী হয়ে হাফেজ মুছআব বিল্লার বিরুদ্ধে পাটকেলঘাটা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তাকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।
পাটকেলঘাটা থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ রোকন মিয়া জানান, বেশ কিছুৃদিন ধরে তিনি পালাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার মাগুরা জেলা সদরের বন্যতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে সেখান থেকে পাটকেলঘাটায় থানায় আনা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটা সিদ্দিকিয়া কওমি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মনিরুল হক বলেন, ঘটনাটি জানার পর ম্যানেজিং কমিটির সভা ডেকে ওই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী মুছআব বিল্লাহ মামলার ঘটনা সংক্রান্তে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দীও প্রদান করেছেন।