বুধবার (৮ ডিসেম্বর) তিনি এ টিকিট কাটেন বলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনস সূত্র সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় মুরাদ হাসানের যে লাল পাসপোর্ট (বিশেষ পাসপোর্ট) ছিল, সেটি পদত্যাগের দিন মঙ্গলবার পাসপোর্টটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে মুরাদ হাসানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে মুরাদ হাসানের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আনিসুল হক জানান, মুরাদ হাসান দল থেকে বহিষ্কার হলেই তার সংসদ সদস্য পদ থাকা না থাকার আইনি বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে।
মুরাদ হাসানের বিষয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ক্ষুব্ধ বলেও জানান আনিসুল হক।
এ ছাড়া ডা. মুরাদ হাসানের অমর্যাদাকর, অশ্লীল ও আপত্তিকর উক্তির ৩৮৭ অডিও-ভিডিওর লিংক চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন বিটিআরসির আইনজীবী। এর মধ্যে ফেসবুক ১৫টি ও ইউটিউব দুটি লিংক অপসারণ করেছে।
বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিটিআরসি ফেসবুকে ২৭২ লিংক এবং ইউটিউবে ১১৫ লিংক চিহ্নিত করে তা অপসারণের আবেদন জানিয়েছে। এর মধ্যে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ১৫টি এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষ ২টি লিংক অপসারণ করেছে।
অন্যদিকে, মন্ত্রিত্ব হারানো ডা. মুরাদ হাসানের সংসদ সদস্য (এমপি) পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্যসংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে তাকে খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমান সম্পর্কে ‘অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করতে শোনা যায়।
ওই ভিডিওতে মুরাদ হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
এরই মধ্যে রোববার (৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় এটি।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। পরে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মুরাদ হাসান পেশায় চিকিৎসক ও আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত সরকারে প্রথমে মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের মে মাসে স্বাস্থ্য থেকে তাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।