নড়াইল প্রতিনিধি: বেতার, মঞ্চ, টেলিভিশন কিংবা চলচ্চিত্র; পীযুষ বন্দোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন সব মাধ্যমেই। একাধারে তিনি একজন আবৃত্তিকার, নাট্যকার ও সংগঠক। তার সাবলীল অভিনয়ের দ্যুতি ছড়িয়েছে দশকের পর দশক। ভরাট কণ্ঠের সংলাপে যিনি মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের তিনি পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের অভিনয় জগতের গুণী এই ব্যক্তিত্বের জন্মদিন আজ। ১৯৫০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন ফরিদপুর শহরে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পীযুষ বন্দোপাধ্যায় আশির দশক থেকে নিয়মিত অভিনয় করেছেন। বিটিভির দর্শকনন্দিত ধারাবাহিক ‘সকাল-সন্ধ্যা’তে শাহেদ চরিত্রে অভিনয় করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। শূন্য দশকে এসেও তিনি নিয়মিত অভিনয় করেছেন। বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ছড়িয়ে পড়ার আগে বিটিভির যুগে পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন দারুণ পরিচিত মুখ। মঞ্চ নাটকে পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান অসামান্য। নামি নাট্যদল ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম সদস্য তিনি।
এই দলের হয়ে তিনি বহু নাটকে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে আছে- ‘কীর্তনখোলা’, ‘প্রাচ্য’, ‘বনপাংশুল’, ‘শকুন্তলা’ ও ‘বাসন’ ইত্যাদি। নাটকের বাইরে চলচ্চিত্রের অভিনয়েও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৮৪ সালে খ্যাতিমান নির্মাতা মোরশেদুল ইসলামের পরিচালনায় ‘আগামী’ নামের স্বল্পদৈর্ঘে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। এরপর তিনি অভিনয় করেছেন ‘একাত্তরের যীশু’, ‘মহামিলন’, ‘উত্তরের খেপ’, ‘কির্তনখোলা’, ‘মেঘলা আকাশ’, ‘আধিয়ার’, ‘আমার আছে জল’, ‘আমার বন্ধু রাশেদ’, ‘গেরিলা’, ‘মৃত্তিকা মায়া’ ও ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’ ইত্যাদি সিনেমায়। এর মধ্যে ‘কির্তনখোলা’ সিনেমায় তার ইদু কনট্রাক্টরের চরিত্রটি দাগ কেটেছিল দর্শকদের হৃদয়ে। এছাড়া ‘গেরিলা’র মতো সফল সিনেমায় তার অভিনয় এখনো মনে আছে দর্শকদের। পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন লেখকও। তিনি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। এছাড়া বেশ কিছু গল্প ও উপন্যাসের বইও রয়েছে তার। অভিনয়ের বাইরে পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায় বিটিভির মহা পরিচালক এবং বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাঝে ‘দাড়ি রাখা ও ঠাখনুর উপরে কাপড় পরা জঙ্গি হওয়ার লক্ষন’ এমন উস্কানিমূলক কটাক্ষের কারণে ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানায় বেশ বেকায়দায় পড়েছিলেন পিযুষ।যদিও পরবর্তীতে দুঃখ প্রকাশ করায় বিষয়টির নিষ্পত্তি ঘটে।