রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শৈলকুপা রিপোর্টার্স ইউনিটির কমিটি গঠন সভাপতি আলমগীর অরণ্য , সাধারণ সম্পাদক টিটো মিজান মাদারীপুরে ডাকাত কামাল পহলান ওরফে সিএনজি কামাল (৪৩) আটক নৌকার মাঝি নায়েব আলী জোয়ার্দ্দার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় বিজয়ী শৈলকুপা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাকিল আহম্মেদ এর মতবিনিময় ফরিদপুরের মধুখালীতে পানিতে ডুবে নিখোঁজ ১ জন মাদারীপুর জেলা র কবিরাজপুর ছইফউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ এ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা হরিণাকুণ্ডুতে এক দশক ধরে অকেজো হয়ে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ নতুন ভবন ঝিনাইদহ সদরে মাসুম এবং কালীগঞ্জে শিবলী নোমানী চেয়ারম্যান নির্বাচিত রাজৈরে মহিলা মেম্বার ও নারী নেত্রীকে মারধরের অভিযোগ ঝিনাইদহ-১ আসনের উপ নির্বাচনে বাঁধা নেই
নোটিশ
যে সব জেলা, উপজেলায় প্রতিনিধি নেই সেখানে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। বায়োডাটা সহ নিউজ পাঠান। Email: newssonarbangla@gmail.com

উন্নয়নের ৯০ ভাগই নিজস্ব অর্থায়নে করছি: প্রধানমন্ত্রী

Reporter Name
Update : মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৫৪ অপরাহ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব ব্যবসায়ী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবেন তারা এখান থেকে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজার ধরারও একটা সুযোগ পাবেন। তার সরকার সেভাবেই দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ভবিষ্যতে বাংলাদেশ প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মধ্যে ব্যবসায়িক যোগোযোগের একটি সেতুবন্ধন হিসেবেই গড়ে উঠবে। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সপ্তাহব্যাপী ‘বাংলাদেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২১’ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবেন তারা যে শুধু বাংলাদেশ পাবেন তা কিন্তু নয়। তারা দক্ষিণ এশিয়ার এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজারগুলো ধরার এবং রপ্তানি করার একটা সুযোগ থাকবে। সরকার সড়ক পথ, নৌ পথ, রেল পথ এবং আকাশ পথ সহ সব যাতে উন্নত হয় তার ব্যবস্থা নিচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এই আন্তর্জাতিক ভার্চুয়াল সম্মেলন আয়োজন করে। সপ্তাহব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশে^র ৩৮টি দেশের ৫৫২টি উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) হল অব ফেমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান।
প্রধানমন্ত্রী উদ্যোক্তা এবং অংশগ্রহণকারিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৭ দিনব্যাপী এই সম্মেলন আমাদের দেশের জন্য সম্ভাবনাময় ৯ টি খাত যেমন- অবকাঠামো, তথ্য-প্রযুক্তি ও ফিনটেক, চামড়া, ঔষধ, স্বয়ংক্রিয় ও ক্ষুদ্র প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট-বস্ত্র শিল্পসহ অতি চাহিদা সম্পন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদন এবং ক্ষুদ্রব্যবসাকে অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করেছে যা সময়োপযোগী। তিনি বলেন, এর সাথে সাথে নতুন নতুন আর কী কী পণ্য আমরা উৎপাদন করতে পারি এবং রপ্তানি করতে পারি সেটাও গবেষণা করে বের করতে হবে। কোন কোন দেশে কী কী পণ্যের চাহিদা রয়েছে সেটা অনুধাবন করে সেই পণ্য আমরা বাংলাদেশে উৎপাদন করতে পারি কি-না সেটাও আমাদেরকে বিবেচনা করতে হবে। সরকার প্রধান বলেন, আমাদের যারা ব্যবসায়ী বন্ধু রয়েছেন বিশেষকরে বেসরকারি খাতে-তাদের প্রতি আমি অনুরোধ জানাবো আপনারা এই বিষয়টার দিকে বিশেষভাবে নজর দিবেন। কারণ, আমাদের রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য দেশি-বিদেশি শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীগণ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ফলে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশী পণ্যের নব নব দ্বার উন্মোচিত হবে। রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশ কাংক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে। কোন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ কতটা উন্নত তা বোঝাতে বিশ্ব ব্যাংকের ‘ইস অব ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্স’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালে উক্ত ইনডেক্স-এ বাংলাদেশের অবস্থান আগের বছরের ১৭৬ হতে ১৬৮ তে উন্নীত হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যবসার বিভিন্ন সূচক উন্নয়নে বিশ্বের সর্বোচ্চ ২০টি সংস্কারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। উক্ত ইনডেক্স-এ বাংলাদেশের অবস্থান দুই অংকে অর্থাৎ ১০০ এর নীচে নামিয়ে আনার জন্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিশেষায়িত দল গঠন করে বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিনিয়োগ সংক্রান্ত সকল সেবা সমন্বিত করে একই প্ল্যাটফর্ম হতে প্রদানের জন্য ২০১৯ সাল হতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ (ওএসএস) পোর্টাল ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়। সেই থেকে বিভিন্ন সংস্থার বিনিয়োগ সংক্রান্ত সেবাসমূহ উক্ত পোর্টালে পর্যায়ক্রমে যুক্ত করা হয়েছে। সরকার প্রধান বলেন, সরকার বাণিজ্যিক কূটনীতি জোরদার করার জন্য আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোতে ২৩টি বাণিজ্যিক উইং খুলেছে। দ্বি-পাক্ষিক (বিপিটিএ) ও আঞ্চলিক অগ্রধিকার বাণিজ্য চুক্তি (আরপিটিএ), মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে ২৩টি দেশের সঙ্গে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর করা হয়েছে। বাংলাদেশ বিশে^র ৩৮টি দেশে একতরফা শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক জোটের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি- যেমন আঙ্কটাড, ইউএন-এস্কাপ, ইউরোপিও কমিশন, ডি-৮, বিমসটেক, আফটা ইত্যাদি।
শেখ হাসিনা বলেন, গত প্রায় ১৩ বছরে সরকার দেশের প্রতিটি খাতে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ‘রোল মডেল’। সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড’ প্রাপ্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আশা করি ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী আমরা ২০২৩ সালের মধ্যে ২৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হব। ইতোমধ্যেই দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে এবং ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। তিনি বলেন, সাড়ে ৪ কোটির বেশী মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় এনেছি। ‘প্রযুক্তি বিভেদমুক্ত’ বাংলাদেশ গড়ায় অনন্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখন ১২ কোটি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছি এবং দ্বিতীয় স্যাটেলাইট ও তৈরি শুরু হয়ে গেছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্তির পথে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে এবং বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল এবং পায়রায় গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ কাজেও আমরা বহুদূর অগ্রসর হয়েছি। সরকার এই ছোট্ট ভূখন্ডের বৃহৎ জনসংখ্যার দেশটাতে যোগাযোগ ও কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে, উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত করেছি এবং উন্নয়নের ৯০ ভাগ কাজই নিজস্ব অর্থায়নে করছি। করোনা মহামারির প্রতিঘাত নিরসনে ১ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ও দিয়েছি। স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই জাতির পিতা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রসারেও উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি তার সাড়ে তিন বছরের রাষ্ট্র পরিচালনায় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাফল্য, বিভিন্ন সংস্থার সদস্য পদ লাভ ও স্বীকৃতির কথাও উল্লেখ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Theme Created By Uttoron Host