ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধা ঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন করছেন এক কলেজছাত্রী। তিন দিন ধরে তার অনশন চলছে। তবে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে প্রেমিক শুভ সাহা।
২২ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) সরেজমিন দুপুরে উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের তাহেরপুর (সাহাপাড়া) গ্রামে দেখা যায় ওই ছাত্রীর অনশন করতে দেখা যায় । এ সময় প্রেমিকের বাড়ির লোকজন তাকে নানাভাবে মানসিক শাররীক নির্যাতন করছিল।
জানা যায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ বাজার (বামনজ্বল) এলাকার ওই ছাত্রী দুই বছর আগে রংপুর সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। একই কলেজে তার সহপাঠী ছিল উপজেলার তাহেরপুর (সাহাপাড়া) গ্রামের দুলাল সাহার ছেলে শুভ সাহা। এক সময় দুজনের মধ্যে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে তারা। এরই মধ্যে প্রেমিক শুভ সাহা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
শুভ সাহা কথা দিয়েছিল এইচএসসি পাস করার পরই দুজনের বিয়ে হবে। পরীক্ষার সদ্য ফলাফলে দুজনই উত্তীর্ণ হয়। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দেন ছাত্রীটি। কিন্ত টালবাহানা করতে থাকে শুভ সাহা। বাধ্য হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি শুভ সাহার বাড়িতে ছুটে আসেন মেয়েটি। সেখানে বিয়ের দাবিতে দুদিন ধরে অবস্থান করতে থাকেন। এমন সময় বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় শুভ সাহা। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে সালিশ বসে শুভ সাহার বাড়িতে। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু পিতৃহারা ছাত্রীর মা ছাড়া নিজস্ব লোকজন না থাকায় সুযোগ নেন সমাজপতিরা। শুভকে দিয়ে বিয়ে হবে না মর্মে একক সিদ্ধান্ত নেন তারা। এরপর মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
অনশনকারী কলেজছাত্রী বলেন, ‘সহজ সরলতার সুযোগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শুভ সাহা আমার সব শেষ করে দিয়েছে। শুভ এখন বাড়ি থেকে পালিয়েছে। তার বাড়ির লোকজন গালাগালসহ বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। হয় বিয়ে, না হয় আত্নহত্যা ছাড়া এখন আমার আর কোনো পথ নেই।’
ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ফিরোজ কবির জানান, বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। মেয়েটি এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছে।
সাদুল্যাপুর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’